বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

নাসির ওয়াদেন



  
নাসির ওয়াদেন

লাশ ছুঁয়ে বসে থাকা

বৃষ্টিটা কখন থেমে গেছে
মনে নেই
বাজার থলে হাতে অন্ধকার কেনে

রাত্রিও পেছন পেছন ঘুরঘুর করে
নেতার টেবিলে ক্বালাজ্বর হাঁপায়
ভাগ্য ছিঁড়ল কালো বিড়ালের --

মেঘ হাতির মতো পেট নিয়ে
জল-মেঘ ঝরে  কান্না হয়ে
আকাশের একখানা বিদ্যুৎ এনে
মা রান্না করে  কাপড়
টাঙানো  দড়িতে
সন্তানের জিভে জল---

তারও বাইরে অসংখ্য সন্তানেরা
বিদ্যুৎ চুষতে মায়ের আঁচল টানে

লাশের তির্যক গন্ধ খুঁজে পাচ্ছে  কর্পূর ••••

                   ●●●●●●



হত্যাদের জমিতে উর্বর ফসল

অভিজ্ঞতার আস্তানায় এক বাবাজি
এক মহা মন্ত্র শিখিয়ে দিয়েছিল

মেঘের চুলগুলো শুকাইতে আমাকে
আশীর্বাদের ঠোলা চুরি করতে হবে

পদবিটা গোড়া থেকেই গণ্ডগোল
বাঁধিয়ে দিল আমাদের পরিবারে

সেঁকা রুটির মতো দিনটিকে কড়া
তাপে ভেজে অপৌরুষের দাঁত
চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছে---

হত্যাদের জমিতে দেদার ফলছে অশ্রু
বাতাসের পাঠশালায় পাখিরা
আক্রমণের গান তালিম নিচ্ছে

রোদ কী রকম গোমড়া মুখে
পাহারা দিচ্ছে শ্মশানের ঘাট

উল্লাসে উল্লাসে নাঙা নদীর জল
প্রসব বেদনা হলে মাতৃযান খোঁজে।

                 ●●●●●●




বিলাসিতার রঙিন বিজ্ঞাপন

পাথরের ভালবাসা আপ্লুত করে
বঞ্চিত হৃদয়কে --
পাখিও চঞ্চু দ্বারা মায়া খুনি রোদ
ঠোকরায়--সন্তানের প্রতি স্নেহ ---

অন্ধকার আলোর পেছনে পেছনে 
লুকোচুরি খেলতে বৃন্দাবনে যায়

সূর্য আহ্নিক গতি টেনে টেনে বর্ষা আনে

চাষি ভাঙা বাক্সখানি খুলে প্রতিদিন
ত্রিকোণমিতির চাঁদা আর ত্রিকোণী দুটি
একবার হাত বুলায়
স্কেলের দাগগুলো মুছে মুছে যাচ্ছে

পাহাড়ের অংক শিখতে চাইলে
যেতে হবে পর্বতারোহীর আস্তানায়

একবাগ ভর্তি ব্যামো পিঠে নিয়ে
ঘরে ঘরে বিলি করে ডাকপিয়ন
অসুখ প্রেসক্রিপসনখানা নিয়ে
নার্সিংহোমে ডাক্তার ধরে  আনে

ছায়া-শব্দের দেওয়ালে দেওয়ালে
ঝুলছে  বিলাসিতার রঙিন বিজ্ঞাপন ।


                     ●●●●●●●



অবশ্যই অদৃশ্য লোভ ফাঁদ পেতে আছে

বিভ্রান্তির জলে তুলো-বালিশ চুবানো ঘুম
রাত্রি শুয়ে শুয়ে উপভোগ করে

একটু অপেক্ষা করলে দেখতে পাই
সরীসৃপের মতো গুটি গুটি পায়ে
এগিয়ে যাচ্ছে সময় ঘড়িতে--

অদৃশ্য লোভ থিকথিক করে ঠোঁটে
ফাঁদ বসে বসে ধরে পাখি @ শরীর
@ যাযাবর

কান্না দিয়ে কী অহংকার  ধুয়ে
মুছে ফেলা যায় ?
নিরহংকারের ডানা ছেঁটে ফেলা কঠিন

ডানা ভাঙা পাখি অচেনা জগতে ওড়ে
হিংসের সোহাগী আতর মেখে
অবশ্যই অদৃশ্য লোভ ফাঁদ পেতে আছে ।

ভালবেসো না গো, বড্ড ভয় করে
তোমাদের সহনশীলতার ছায়াকে ••••

                    ●●●●●●●




নির্বিকার নৌকার মাল ডেলিভারি

আকাশের সব রঙকে এক জায়গাতে
ঢেলে দিলে
কাদাতে কাদাতে হেঁটে আসে বর্ষা--

ভীষণ অভিমান হলে লঙ্কাও পুড়ে
গায়ে ফোস্কাও পরে

জোৎস্নার ম্লানটুকু ছিনিয়ে নিলে
সাদা রঙ বেড়িয়ে আসবে
লাল--নীল --সাদা কিরকম হারে
বেড়ে চলে চক্রবৃদ্ধি সুদ---

মানুষেরা অশরীরী হয়ে উড়ে যায়
আত্মা-পরমাত্মার আরশে
চাঁদের কলঙ্ক বলে কিছু নেই
আছে আভিজাত্যের অলংকার

সন্ধিহীন নৌকাগুলো
আ-ঘাটে বে-ঘাটে নোঙর ফেলে
ইতিহাস ভুলে, ভূগোল পেরিয়ে
আলু শানা পান্তা ভাতে
মুড়িমুড়কির মতো ভদ্রতা ফাটায়

নির্বিকার নৌকা মাল ডেলিভারি করে পতনের ঘাটে ।
                  ●●●●●●●