বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মৌ মধুবন্তী




মৌ মধুবন্তী

আরমাজম

ক্রমাণ্বয়ে ঝড়ের দিকে

যেমনটি চাই,তেমনই ঘটে
ঘোড়ার পিঠে উট ওঠে
চাবুক পড়ে সপাং সপাং
সময়টা কুন্ডলি পাকিয়ে
ভেতরে জাগিয়ে তোলে
ওরাং ওটাং
ঘড়ির কাটা হাসতে হাসতে
দুলতে থাকে, এমন তো দেখিনি
আগে।
কত কি দেখার বাকী
চি হিঁ চি হিঁ ডাকছে, রাত পাখি
ডানা মেলে দিয়ে, অজগর সাপের
দিকে চেয়ে থাকে নিস্পলক।

চাপ,তাপ আর সমুদ্র ঝড়
দীর্ঘদিন না পাওয়ার বিমুর্ত
রূপ নিয়ে গিলে ফেলে ঝড়ের গতি
ঝড় বাড়তে থাকে ভেতরে,বাইরে
দ্বিগুণ ত্রিগুণ বেগে, রাত তখন
ভোরের আলোর জিহবার ভেতরে
জিহবা দিয়ে লক করে দেয়
আদৈহিক সকল তিক্ষ্ণ চিৎকার।
ভোর হ, ভোর হ, এই বলে
যখন কন্ঠ উচ্চস্বরে নিনাদ তোলে
সমুদ্র উপুড় হয়ে সব জল
ঢেলে দেয় বুকের উপর সুর্যের চুম্বনে।
স্তন যুগল আর নিতম্ব সম্পাদক
সুস্থির আবেশ নিয়ে জানালার কাঁচে
রোদ চোষে।
তখনো জেলি ফিস চিকচিক করে আলো ছড়ায়।
জীবনের নান্দনিক দিক
সকলেই শিখে নিক
এক দুই তিন চার
দৈহিক থেকে মানসিক ভার
নেমে যাক নেমে যাক
সোমবার থেকে শুক্রবার
বিস্তৃত ধ্যান, ব্যবধান দূরপাল্লার
তবুও ওরাং ওটাং, চাবুক মারে
সপাং সপাং।
উল্কার বেগে মাধ্যাকর্ষণ উল্টে দিয়ে
সিংগিং বীচ মাতাল রকম, মার্টিনি
ভুজংগী, তখনো তৎপরনি,
ফ্লাওয়ার পটে আঁকা চিত্র কেবল
বাজায় মাধ্যমিক রাগিনী।
৫ সেপ্টেম্বর,২০১৭
টরন্টো,কানাডা,পৃথিবী





নাগরিকত্ব জন্মের অধিকারে

হাহাকারে ডানা ঝাপ্টিয়ে যাই
বাতাসের ডালে বসে,আদরের রোদ
এখন দুরত্বের মেঘে আড়াল হয়ে হাসে।


কখন সময় পার হয়ে যাচ্ছে
মায়ের বুকে হাত বুলিয়ে, চোখের ভেতর
আরমা হ্যারিকেন হয়ে দুলছে তিনশ কিলোমিটার বেগে।


মনে মনে ঝাপটে ধরি সকল শিশুকে
শক্ত পাঁজরের নিচে।
তবু স্বস্তি নেই, কি করে লাশ হয়ে যাচ্ছে
হাজার হাজার জনতা রোহিংগা নামে।
মায়ানমারে মায়া মারে--
নামে কি আসে যায়?


বড় পরিচয় মানুষ হয়ে এসেছে মানুষের পৃথিবীতে।
ভূখন্ড ভাগ হয় বলে,মানবিকতাও মুষড়ে পড়ে।
এ কেমন নিয়ম! ধর্ম কোলে বসে চুপ্টি করে হাসে


পৃথিবীতে স্থান সংকুলান না হলে,
পাঠিয়ে দাও! ওরা রোহিংগা নয়, মুসলমান নয়, ওরা মানুষ
মানুষগুলোকে  মংগল গ্রহে পাঠিয়ে দাও ।
তবু বেঁচে থাক জন্মের অধিকারে, নিরাপদে।
নাগরিকত্বহীন এক ধ্রুপদ গ্রহে।

মানুষের নাগরিকত্ব তার বাঁচার অধিকারে।
এইটুকু জানো। এইটুকু মানো হে মানবগোষ্ঠী!
৮ সেপ্টেম্বর,২০১৭
টরন্টো,কানাডা,পৃথিবী





ঝরে পড়ে অঝোরে জীবন

ও ঝড় ঝরে পড়, গড়িয়ে পড়!
ঐতো সাত তলার উপর থেকে
গড়িয়ে পড়ছে কলার খোসা; মানবিকতা, সভ্যতা
পড়তে পড়তে ভাবছে
ভাবতে ভাবতে পড়ছে ।হায় নেই
আমার জন্য একটিও কবিতা নেই।


থাকলে আজ হয়ে যেতো
প্রেসক্লাবে, রমনার বটমুলে, রেস্ককোর্সের মঞ্চে
টিএসসির উন্মুক্ত চত্বরে , সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে,
বইমেলায় কিংবা জাতীয় যাদুঘরে,
পাবলিক লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে
আজ হয়ে যেতো
কবিতা সন্ধ্যা; সেই সন্ধ্যায় কবিতা পাঠ করে
কেউ কেউ কাল কেউটে সাপ হয়ে উঠত,
বিরাট কবিতামোদী হয়ে যেতো; হ্রেষা রব করত।


ভাবতে ভাবতে
বাতাসের বুহ্য ভেদ করে কলার খোসা ভুপাতিত হলো
ময়লা আবর্জনায়, মানুষের অবৈধ চরিত্রে--


দুর্গন্ধের ভেতর ডুবে যেতে যেতে চিকন গুনিয়া,
শ্বাস রোধ হয়ে জৈবিক জীবনের যবনিকাবাদ শুরু।


ভাসমান থেকে ভূপাতিত।
কুমারী থেকে ধর্ষিতা, জীবন্ত থেকে মৃতন্ত্য
ভূগোল ও নৃতত্ব সংকল্প
মিটে গেল অবিনশ্বরবাদ, সুতরাং এর অস্তিত্ববাদ,যুগপৎ ধংসের খেলা।


চারিদিকে যৌনবাদ, বাসবাদ, ট্রেনবাদ ধর্ষণ সয়ে যাবে কি মানুষের গেটে বাত হয়ে ?


হায় লিংগ সুচেষ্মেষু ক্রিয়াপদ সমাজ
হরিণাবনে কার লাশ কে দাপন করে?
৫ সেপ্টেম্বর,২০১৭
টরন্টো,কানাডা,পৃথিবী




হ্যারিকেন ধর্ষণ

ওর চুলে আলগা খোঁপা,ওর চুল বাঁধনহারা,ওর চুল এলায়িত-দীর্ঘ বেনী গাঁথা,
ওর চুল রংহারা, ওর চুল
ব্লন্ড,ওর চুল কোঁকড়ানো-বেশ ঝাঁকড়া।
সব চুল উড়ে যাচ্ছে দুই শ' পঁচান্নবই কিলোমিটার বেগে,সকল রেকর্ড ব্রেক করা।
সেন্ট মার্টিনকে মিশিয়ে দিয়েছে কাদায়।
উত্তর মেরুতে নর্দার্ণ লাইট স্টর্ম, দক্ষিণে আরমার দানবীয় তান্ডব।
কিছু মানুষ ব্যস্ত খেলা দেখায়, কেউ ভুগছে উচ্চ রক্তচাপে
বাতাসে সব চুল উড়ে যাচ্ছে, মানুষের ভেতরে বাতাস ঢুকে যাচ্ছে,
 কোন মানুষকে ভুল মনে করেনি বাতাস। ভুল যে টুকু, তা আমাদের মানুষের মাঝে।

 এঁকেবেঁকে ভুলসাপ চলে রক্তের প্রবাহে, অভিশাপ হয়ে।
এই ভুলের গতি কত কিলোমিটার?
কোথাও কি  মিটার আছো
মেপে নাও আমার গতি ভুলের পরিমিতি
কেইবা এমন  আছে নির্ধারণ করবে তার গতি--
কেউ কি আছো, মানবিকতাকে বাঁচিয়ে রাখতে?
সভ্যতার চরম ক্ষতিমেনে কি নেয়া যায়?

ক্ষতবিক্ষত
   শ্রীকন্ঠদিয়া,
       এন্টিগুয়া,
          বারবুদা,  
             সেন্ট মার্টিন,
                  কিউবা,
                               মায়ামি,
         ফ্লোরিডা রোহিংগা  দেশহারা।দিশেহারা
ভূগোল ছোট হয়ে গেলে কোথায় যাবে আমাদের সন্তানেরা?
হাতল বিহীন পৃথিবীর হাত বদল হচ্ছে
ক্ষমতাধর রাজনীতির কাছে।
শুরু হয়েছে ধর্ষণের নতুন পদ্ধতি। রাজনীতি রাজনীতি।

রাজনীতির রাত নেই, ঘুম নেই, দেশ নেই, বেশ নেই,
শুধু তান্ডবরীতি
আর তান্ডবেষ্ণুভরা চেতনার কঠিন আঘাতে ধ্বসে পড়ে
মানবিকতার ভুমিতল।
ঘুম গনানি নতুন পদ্ধতি
ঘুম পাড়িয়ে রাখা নিথর শরীরের উপর চলে
আরমার চেয়ে অধিক তান্ডব।
একে তো ধর্ষণ বলা যায় না।
ঘুমের ভেতরে স্নেহ পিরিতি, আরমাজম মাত্র।
অত:পর ছাই হয়ে যাও শ্মশানে।
কেউ জানবে না। কে পোড়ে কোন কাঠে-
গুম,হত্যার দায় থেকে মুক্ত রাজনীতিবিদ
ভোটগুলো জড়ো করে মুঠো ভরে।
মুক্তির পণে চলে কোরবাণীর ঘ্রাণ।
দুর্গন্ধে বাতাস বেকায়দায় পড়ে ছুটছে,
জ্ঞানশুন্য হয়ে দিকবিদিক ছুটছে,
ছুটে চলছে জিওম্যাগ্নেটিক
কেন্দ্র ভেদ করে,মানবিক সভ্যতার
আস্তরণ ভেদ করে, অসুস্থতার চিহ্ন গায়ে মেখে,
বিশ্ব দানবে ঘিরে ধরেছে
এমাজন গিরি থেকে হিমালয় চুড়া।
পৃথিবী কি এতোই বুড়া?
লাঠি উঁচিয়ে কি একবার দিতে পারে না দিক নির্দেশনা।

হে মহামান্য, বিশ্বব্রমান্ড!
তোমার স্খলিত দাঁতের ফাঁক গলে যে বায়ু নিসৃ:ত হচ্ছে,
তার টুটি চেপে ধরে রক্ষা করো এই ধরণীতল।
এই বুঝি তোমার মানুষ মারার জাঁতাকল?
কল কল রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে নাফ নদীতে,
আরাকান পাহাড়ের শ্বাস রোধ হয়ে যাচ্ছে
অত্যাচারের বেদনার্ত চিতকারে,
তুমি কি শুনতে পাওনা?
আমি যে সুদূর থেকেও শুনি।

তবে কি আমি তোমার চেয়ে অগ্রগামী?
৬ সেপ্টেম্বর,২০১৭
টরন্টো,কানাডা,পৃথিবী




গৃহহারা দিন টুকরো বিলাস


গৃহহারা দিন টুকরো বিলাস
গারিবাল্ডি পাহাড়ে জোয়ান প্রপাত
ধেয়ে যায়, ছুটে যায় গতির বহরম মৈখাং দেখিয়ে
গ্রীল্ড চিকেনের রেপ; অব্যক্ত থাকে চিকেনের বৈরাগ্য বেশ দেখে
তোমরা মাথার উপরে বসে দিন গোণো,
আমরা কিছু কবিতা মাটির সাথে সহবাস করি, সঙ্গম করি রঙ্গে বঙ্গে
অর্গাজম ঘটাই স্টর্ম সার্জ দিয়ে মায়ামি বীচে
এতোই হর্নি ছিল আরমা জলের গহীনে ; লোকে বলে হ্যারিকেন আই।
শরীর যদি তিনশ কিলোমিটার সবটাই নিস্পেশিত করে দিত অবলীলায়
নর -নারী সংগমে অঙ্গম হয়
নরেও নরের কাছে ধর্ষিত হয়;
কটুক্তির মত নারীও নারীর সাথেই---

বাতাসের ভেতর এতো কামভাব, প্রবল থাপ কেমন করে জাগে
জলের ভেতরে বাতাস ডুব দিলে, কতটা মাটি জেগে ওঠে
বুঝেছে ইস্ট ক্যারিবিয়ান আর ফ্লোরিডার বৃক্ষরাজি,
গৃহহারা মানুষ; টুকরো বিলাসে আশ্রয় নিয়েছে শরনার্থী কেন্দ্রে,
এই কথা কিম্ভূত চিন্তারকে বলে
টিভির পর্দায় লাইভ দেখেছি
আরমার অর্গাজমের জলে কেমন করে রাস্তা ঘাটে ডোবে।

ডুবে যায় কর্মজীবি চিকেন রেপের ভেতর, সর্বহারা হয়ে ভাবে
এই কি মানব জীবন?
নত শিকার করো গ্লোবাল ওয়ার্মিং-
১৪ সেপ্টেম্বর,২০১৭
টরন্টো,কানাডা,পৃথিবী