বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

স্বপন কুমার দাস



স্বপন কুমার দাস

নেমিসিস

যাবার সময় কেউ আবার পিছনে ডাকে।
কিছু কি ফেলে গেলে ?
অপরাধীর মত দাঁড়িয়ে  থাকা।
আসলে তো কিছু রেখে যাওয়ারই প্রতিশ্রুতি ছিল।
অন্তত যেখানে প্রতিপল স্বপ্নকে পুড়িয়েছি
তার  কষ্টগুলো..।
দিন কেটে যায় দক্ষিণায়ন থেকে উত্তরে ঘুরে ঘুরে।
রবি থেকে খরিফে
এই কঠিন মাটিতে একটাও বীজ বপন করা হয়নি।
দেওয়ালে পিঠ ঠেকার আগেই
তাই তোমাদের নাব্য হাতকে চিনিয়ে দিতে চাই
এই অলৌকিক সরাইখানার
এক চিরকালীন নেমিসিসের কাহিনী।





হাতছানি

কার পদচিহ্নের অনুসরণ-   
সবই ভীড়ের মিছিলে মিশে যাওয়া।  
যুদ্ধের পর শান্তি স্থাপিত হলে
মথেরা ফিরে আসে।
ছদ্মবেশ খুলে ফেলে অনেক পতঙ্গ।

থইথই ইচ্ছেগুলো যে বেঞ্চে পাশাপাশি বসত
সেখানে আজো আলো আঁধারীর ঘনিষ্টতা।
সময়ে অভ্যস্ত শ্রম কোনো ফসল ফলাবে।
প্রসব ক্লান্তির পর নাভিমূল থেকে
 ধ্বনিত  হবে  কোন ব্রহ্ম জ্ঞান।
এমন আশায় আষাড়ের হাতছানি।                        





এলিজি

শরতশেষের হলুদ পাতারা
ঝরে পড়ে একাকী বারান্দায়।
ডানাকাটা রোদ..
পড়ন্ত বিকেলে ভেসে আসে
ইঙ্গুদী গাছের এলিজি।
প্রযত্নে পাঠানো কারো প্রেম
নীমিলিত সহবাসে শোনে
রবীঠাকুরের গান।
হাতের মুঠোয় বর্ণে  বিবর্ণ ফুল
মালা গাঁথা হয়নি।
যে রাস্তা দিয়ে ফিরেছিলো কেউ
নিয়তির স্রোতে..
অতলান্ত স্বপ্ন মেখে চোখ মেলা হয়নি।





আশ্বাস

শিকড় ছড়িয়েছে সীমারেখা মেনে-
ডালপালা হাত।
দৃষ্টিহীন  ত্রিনেত্র দেবতারা-
মত্ত..   অন্তহীন পাশাখেলায়।
পৃথিবীর আমরণ পথিকেরা
নিবিড় অন্বেষণের পর
কুড়িয়েছে সমুদ্রের শূন্যতা।
শান্তির জন্য মেনে নাও সব তীব্র পরাজয়-
ভেজা বর্ণমালা, বৈষ্ণবী বকুল
আপাতত এখন।
ধূসরতা কাটুক যত নীল সবুজে।
বুদ্ধের বরাভয় হাসি-
কিছু কি আশ্বাস পেলে ?





সালতামামি

গভীরতায় মগ্ন হলে
পৃথিবীটা নেহাত ছোট হয়ে আসে।
নদীরা সব সোঁতার মত
সৈনিকেরা ধুলো উড়িয়ে
উজাড় গ্রাম পেরিয়ে যায়..
ওদের জন্য আজ
কাছাকাছি কোন গন্তব্য নেই।
কালকেও ছিল না।

মূর্তিকে ফুলদিয়ে ঢেকে
ব্রতপালনের চেষ্টা একটা অপরাধ,
কেউ স্বীকার করে না।

ভাজেঁ ভাজেঁ বরফ জমেছে
      .                            জ ম ছে।
গলনের তাপটুকু
কেউ শরীর জ্বালিয়েই বয়ে নিয়ে আসবে।

পর্ণমোচী বনের পিছনে
কখনো এক টুকরো কালো মেঘও ভাসবে।

এসবই আব-হাওয়ার পূর্বাভাসের মত।

যেমন আমাদের অর্ন্তবাসগুলো  উড়িয়ে
             আরো কিছু কালবৈশাখী..