বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

শাকিলা তুবা



শাকিলা তুবা
তহিঁ
তখন আসলে কিছুই ছিল না
তখন মনমরা গাঢ় রোদ
তোমার হাসির ভেতর থেকে বালিকা
বেরিয়ে আসত মন্থর ড্রাগ
অনুরক্ত পরশুগুলো ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে
রোদ পোহালো কত
তখনও আসলেই কিচ্ছু ছিলনা।

সময় তখনো ক্ষণস্থায়ী
যদিও অতীতটা দীর্ঘ ছিল
সৎকারযোগ্য তোমার শরীর
বেলচা ভর্তি মাটি ছিল সবুজ রোদেলা রঙ
জনাকীর্ণ দৃশ্য সব তুমিও হামানদিস্তায় পিষে
বালিকা, ও বালিকা
আকাশে পুঁতে রেখেছ কয় মানুষের মৃতদেহ!

তখনো কিছুই ছিলনা
গোটা কয়েক ইতস্ততঃ ছড়ানো
বালক-বালিকার দীর্ঘ অতীত ছাড়া,
বুক উৎসারিত কিছু দীর্ঘ দীর্ঘশ্বাস ছাড়া
আসলে সবই ফাঁপা,
দৃষ্টিহীনতার আগাম আভাস
ওহ হিইনাস! ওহ ওহ বালিকা!



রৌদ্রস্নাত রাত
স্বপ্নের সাথে কটা রাত জমে যায়
ছায়ার মতো, হ্যাঁ ঠিক যেন ছায়া
আমার মিষ্টি কুকুর এথেনা
যে কিনা চলে গেছে অর্নবের বন্ধুর সাথে
ছায়ার মতো দৌঁড়ে আসে সেও

বন্ধ ফেসবুকের দরজায় বসে থেকে থেকে
ক্লান্ত আমি ফের নতুন স্বপ্নের হাত ধরি
হোসনে আরা বেগম আপার হাতে
হাত রেখে বলা হয়না আর
আমার স্বপ্নগুলোও আজকাল বড় ক্লান্তরে আপা

আমি ক্লজেট গোছাই বারবার
রান্নাঘরের সিঙ্ক চকচকে করে তুলি খামোখাই
আমি প্রতীক্ষায় থাকি অনেক স্বপ্নের
ইউটিউবে অলিভিয়া থেকে নিকোল কিডম্যান
সব ঘাঁটাঘাঁটি শেষে আমি সেই একা তুবা



মুদ্রার ঐ পিঠ
দরজা খুলতেই একজন হ্যাকার
হাতে ধরিয়ে দিল ফরাসী কবিতার ভাবানুবাদ
কয়েকটা চীৎকার, ভুল রামধনু রঙ
সাথে একবোতল শ্যাম্পেন
অথচ কেউ জোরে জোরে বলছে
না, নাআআআআ

তারপরও উঠল ক্রন্দন
বলা হলো, এই মুখটা ভুল
এই হাতগুলো ভুল মানুষের হাত

সব ভুল থেকে র-শ্যু উকার ছেঁটে
একটা আ-কার বসিয়ে দিলেই
জোর বাতাস বইবে, পাতায় পাতায় শনশন
হেমন্তের সূর্যডোবা নদী; ভাসমান সুখী ডিঙি
বলে দেবে, ভুলেরা আসলে ভাল
যে আরো চায় শুধু সে-ই ভাবুক ভালবাসা



প্রেম চাইনি আমি অপ্রেমের দিনেও
এই দেখো আয়নায়
একটা ট্রেন হুঁশ করে চলে গেল
গন্তব্যের ইশারায়...
চোখ থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে কাশবন
নির্দ্বিধায় পার হল
সিনাইয়ের চূড়া;
কয়েকটা খাঁড়ি।

ট্রেনটা ফিরে এল না অথচ
রেললাইনের স্লিপার থেকে পাথরগুলো
পায়ে পায়ে হেঁটে হেঁটে এল
কাশবনের কাছে
এবং অতঃপর...
আয়নার পারদটুকু
খেয়ে ফেলল দ্বিধাহীন।



আ বাস জার্নি টু হোম
প্রতিটা বাস স্টপেজে
আমার একজন করে প্রেমিক থাকে
বাসে উঠবার পর অধিকারভুক্ত দাসীর মত
ওরা আমার পেছনে এসে দাঁড়ায়
আমার ঘাড়ের মাংসে আঙ্গুল ডুবিয়ে দেয় আর
উরুর পেছনে ওদের উঁচানো স্টেনগান
ঠেকিয়ে রাখে।

বাসের ঝাঁকুনীতে আমি ঘুমিয়ে পড়ি
আমার চরম উল্লসিত শরীর
রাগমোচনে একাকার হতে থাকে।

বাস থেকে নামবার আগে
একটা সিটে রেখে আসি
আমার শরীর বিচ্যুত তাল তাল মাংস
আমার প্রেমিকগণ খাবে বলে।
পৃথিবীর সকল
মাংস-হাড্ডি-মজ্জা তো আসলে

ভোগ দখলের, কে না জানে!