শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০

সুধাংশুরঞ্জন সাহা


সুধাংশুরঞ্জন সাহা

জ্যামিতি

টুকরো টুকরো রাত্রির জ্যামিতি
আর জং ধরা হলদিয়া বন্দর
মাস্তুল উঁচিয়ে গ্রামঘাতী শহরকে
প্রশ্নে প্রশ্নে জর্জরিত করে ।
#
বেহালার ছড় হতে চাওয়া নদীও
শোনায় একটার পর একটা
জমানো কান্নার গান ।
সেই সব গান শুনে
সব রকম বিভেদ ভুলে
তিস্তা, তোর্ষা, চূর্ণী আর হলদি নদীও
ঘন হয়ে বসে নিজেদের মধ্যে ।






বীজগনিত

শহরের বীজগণিত কষতে কষতেই
কেটে গেল জীবনের সিংহভাগ ।
তবু, সব উত্তর মানতে পারিনি আজও ।
এটা ঠিকই , সব সফলতা পরায়নি মুকুট ।
আবার অনেক ব্যর্থতাই দিয়েছে স্বর্ণমুকুট ।
যদিও, সব মুকুট আজ ধুলোয় মলিন ।
এখনও কত কিছু শেখার বাকি !






পাটিগনিত

সাইকেল শিখে
বেলেঘাটা খালপাড় দিয়ে ফিরতে ফিরতে
কত যে পাটিগনিত কষেছি আপন মনে....
তবু, সাইকেল চালানো হল না আমার ।
সময় এমন ভাবে বদলে গেল যে,
আজ গ্যাংটক, তো কাল শিলিগুড়ি
এভাবেই দিল্লি হায়দারাবাদ
কিংবা মুম্বাইয়ের বিমানে
পাটিগনিতের সমস্ত ফর্মূলা ভুলে
জড়িয়ে পড়েছি মেঘের প্রেমবিলাসে ।







বিষুদ্ধ অংক

বিশুদ্ধ অংকের ছাত্র আমি ।
অথচ জীবনের প্রতিটি অংকে ডাহা ফেল।
আমাদের রোদের ব্যালকনিতে
যে সব বিচিত্র পাখিদের আনাগোনা
তারা কেউ শোনায় রাগসঙ্গীত
কেউ রবীন্দ্রসঙ্গীত
কেউ লোকগান
কিংবা বাউল ...
সেই পাখিপ্রেমেই কেটে গেল জীবন
ভুলিয়ে দিল যাবতীয় বিশুদ্ধ অংক ।






ইনটারনেট

কান্নার দেওয়ালে থাকে সরলতার লিখন ।
সেই লিখন পড়তে পড়তেই
বেঁচে আছি, ভেসে আছি
নাটক ও কবিতার চারিত্রিক ঋজুতায় ।
#
এই সহস্রাব্দের সবচেয়ে বড় ঘটনা
অবশ্যই ইনটারনেট,
যা মানুষের নাগালের সীমাকে
ভেঙে গুঁড়িয়ে জ্ঞান, বিজ্ঞান, তথ্য, বানিজ্যের
ঘটে গেছে ব্যাপক বিপ্লব ।
#
তবু, দেশে দেশে কাঁটাতার, বেওনেট, বুলেটেই
উদ্যত অস্তিত্বের সীমানা ।
#
শুধু ভুবনায়ন ঘটে যায় নীরব চেতনায় ।