বৃহস্পতিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

সবর্না চট্টোপাধ্যায়



সবর্না চট্টোপাধ্যায়

মা হয়ে উঠছ ক্রমশই

দুদিন থেকে বদ্ধ হয়ে আছি
হাত রাখছে অন্ধকার!
কাজ করছে না মাথা
অসহ্য ব্যথা সারা মুখে
কে যেন ঢেলে দিচ্ছে একটু একটু তাপ।
খাইয়ে দিচ্ছে গরম দুধ!

কি ভীষন অন্ধ হয়ে আছি গতদুটোদিন
গভীর নরম হাত
বুলিয়ে দিচ্ছে সারা পিঠ
যন্ত্রণায় যন্ত্রণা মিশে
তুমি যেন মা হয়ে উঠছ ক্রমশই...







কোনটা সত্যি

ঢুকতে ভয় হল...
হাওয়ায় উড়ে আসে যদি ছাই!

সোফার আড়ালে নড়ছে ক'টা আঙুল
হাত ধরে শেখানো পথ ,
অসাড় আকাশের কাছে শুধু জল চায়...

ভিজে যায় আলো।
চেয়ে আছো শিশু,
জল জল আর জল….
গামছা ভিজিয়ে পায়ে দিই!
মাথায় হাত রাখি। চোখ বোঝো।
কোথায় হারিয়ে গেছে সেই কর্ণকুন্তীর সংবাদ?

সংলাপ ব্যর্থতায় ভুগি।
কি কঠিন যুদ্ধ করি রোজ।

তবু জানি ছেড়ে দিতে হবে মুঠো।
বিশ্বাস কাঁপে সত্যের কাছে...
বিকারহীণ অসহ্য যন্ত্রণায়!







ক্রিসমাস

পীচ ফলে গড়িয়ে পড়ছে মধু
জেনে বুঝে তুমি গুটিয়ে নিচ্ছ শার্ট।
টেবিলে সার্ভ করেছি মিক্সড ফ্রুট স্যালাড
লাল মোমবাতি কেঁপে কেঁপে ওঠে।
ক্রমশ আরও ঠান্ডা হয় রাত!
সকলে ঘুমোলে ঠিক বুড়ো সান্টা আসে,
চুপি চুপি তুলে নেয় সমস্ত পেরেক।








ওহে বালিকা মেঘ এনো তো...

দক্ষিণ জানলায় ছুটে আসে হাওয়া।
কানাকানি করে দুপুরের ঘুম

এবার কি সোনালী আলপনা?

অথচ কেউ তো নেই !
জ্যোৎস্না নামে শিরীষ পাতার কোলে
জোনাকি ঝিম বারান্দায়...

জানি তুমি নিষ্ঠুর হয়ে আছো আজও..
সারা গায়ে কঠিন কারুকাজ
তবুও নিশ্চুপে হাসি হাসি মুখে
লিখছি বিচ্ছেদের শেষ সংলাপ....

এত হলুদ হয়েছে কেন তবে চাঁপা
ভিজতে ভিজতে থৈ থৈ করে শোক।

শেষটুকু বরং না জানাই থাক
মৃত্যুহীন…. কল্পনা হোক!







খিদে

সমস্ত আহ্লাদে খুলে দাও
সেই আদিম অরণ্য
যৌনতা ছাড়া ভালোবাসা বোঝেনা আজও
চিহড় লতায় খোদাই কারুকাজ।
আর পাথরের দাগে দাগে
তাকে মানুষ বানিয়েছে ঈশ্বর।

আমি তার শব্দরূপ সাজি। গোঁগানি থেকে স্বর
চাপা পড়ে আছে যে সাদা রজনীর ভারে
বাসি গন্ধে কাম জাগে।

আমাদের যৌনস্নান হয়। মিশে যাই অতল
থেকে অতল... গভীর নিঃশেষ...
ফেনা ওঠে। কবিতা হয়ে জন্ম নিচ্ছে খিদে
জিভ থেকে ঝরে পড়ে
হাজার বছরের নগ্ন লালা...