রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৮

ঝুমা মল্লিক



ঝুমা মল্লিক

মধ্যরাতে বৃষ্টি

অঝোরেবৃষ্টিতে ভেসে গেছে সবখানি
এমন বরষা ছিলনা কোন দিন
মধ্যরাতে বৃষ্টি পরে স্বপ্ন ভাঙে আচমকা
যখন বৃষ্টি এলো, শব্দেরা জানান দিল
মাছেদের খেলা চলে জলবন্দি বাক্সে,
শরীর ক্লান্তখানিক, মন ভেজা
বৃষ্টি পড়ে, ভেসে গেছে আনন।
বৃষ্টিতে ও মন ভেসেযেতেচায়, সাঁতার অজানা
হেমন্তে ও বৃষ্টি পড়ে ঝমঝমিয়ে।
আকাশ ঘিরে মেঘেরা ভেসে বেড়ায়
নিরালা গৃহ কোন, বৃষ্টির শব্দতে তৈরী হয়েছেশব্দজাল।
মনে নেই কোন যন্ত্রণার দাগ।
বোধ গুলো হামাগুড়ি দেয় শরীর জুড়ে
বৃষ্টি মুখর এ রাতেমন ভেসে যায় দূরদেশে।





ভালো থেকো

ভালো থেকো তুমি,ভালো থেকো,
শুধু তুমি ভালো থেকো
মিঠে রোদে মিঠে সুখ
ভুলে যাও যত দুখ।
ভালো থেকো তুমি, ভালো থেকো,
পাইনি যা কিছু তা স্বপ্নে অতীত
পাবো ভাবলে দুঃস্বপ্ন যন্ত্রণা।
দিয়েছো যা কিছু,মালা গাঁথা প্রানে
দিতে পারোনি যা বাঁধিয়ে রেখেছি ফ্রেমে।
কপালের নামে সবকিছু করেছি দান
দুঃখ উদযাপন চলছে চোখের কোলে
চোখের জলে রোগ।
সুখে আছি মানি তবুও অসুখ জানি
মাথায় যখন দ্বন্দ্ব চলে, গায়ে আগুন জ্বর।
হিসেব গুলো বেহিসেবি, মন বলে তুই চল
বুকের মাঝে রক্তক্ষরণ, জ্বলছে বনভূমি ।
মরছি যখন, জ্বলছি যখন
বলছি তখন
ভালো থেকো তুমি, ভালো থেকো






সালের শেষে সাতকাহন

একই জীবনে একটি সালের সীমারেখা
সীমন্তে বয়ে যায়রক্তকরবী
বোধ জন্মায় ভোরের বেলায়
জীবন পঞ্জিকা লেখা হয় জীবদ্দশায়
বাড়ির মাঝে ঘরের মেলা
ঘরের মাঝে রংবদল
জানালার কাঁচেপাখিরছাঁচ
রঙিন পর্দা হাবুডুবু খায় রাতেদিনে।
জন্ম নেয়কত পাতা বাহারির দল
ভালোবাসা আজ বিরিয়ানির উগ্র গন্ধ
বাসায় ভাসছে কত কঠিন প্রশ্ন
গান চলছে গানের দ্বারে।
কবিতা আঁকিবুঁকিকাঁটে মনের ভিতর
অনেক প্রশ্ন একি জীবনে।
না পাওয়ার দল নৃত্য করে নিঝুম রাতে
হিসেব মিলবে না হিসেবের খাতায়
উদযাপন চলছে মহালয়ার
আমরা বাসা বাঁধি বাসায় ।
এক বুক কবিতা,একটু ভেসে যাওয়া
ভেসে যাই নতুন বর্ষে।






আমার আমি

আমি মেয়ে চরিত্রে
মেয়ের মতোই ছিলেম কুড়ি,
ঝড়,ঝঞ্ঝায় ভেসে গিয়েছিল দশ।
প্রেম ,ট্রেম,হামাগুড়ি দিয়েছিল পথে
ভালোবাসা হারিয়েছিল বাঁকে
আমি স্ত্রী চরিত্রে
স্ত্রীর মতোই আছি এক যুগের বেশি,
দায়িত্ব বেঁধেছি ফ্রেমে।
দায়িত্বশীল হতে হবে বলেছিল সে,
ভালো কর্মী হতে হবে, সাব্বাশি তবেই
রাতে দিনে কাজেই ভোজন
তোমার খোঁজে ঈশ্বর,তুমি খোঁজী সবার
ভালো বউ সেজে গুজে বাড়ছে জীবন
বোকা বউ হলেই ভালো বউ হবেমনে রেখো সবাই
মা হলাম তাও অনেক রজনী
গর্ভে আমার পুত্র সন্তান ।
খাওয়াই, পড়াই , শোয়াই,দিবারাত্র ভালোই
খোকা আমার বড্ড ভালো, যা বলে তাই করে
এসব দেখেই আগুন,জ্বলছে সেগুন
খোকা আমায় যেমন বলে, তেমন মাতা সেজে
প্রাইজখানি নেবোবলেই দারুণ সেজেগুজে।
আমার আমি?কোথায় খুঁজি
আকাশ পানে চেয়ে দেখি তারায় তারায় আমি
ভীষণ দামী ।দাম দেবে দামী।
ভেসে বেড়াই শব্দ জালে, শব্দ নিয়েই কাজ
দুচোখের স্বপ্নগুলো কেমন আছে ভাসি।
শব্দ আমার,শব্দতেই বাস, শব্দতেই ভালোবাসা
শব্দ দিয়ে গরেছি জগৎ।






একশত শাড়ি

একখানি গোলাপী বেনারসিতে আমি
মনে ও গোলাপী রঙের বাসা।
আলমারিতে একটি দুটিশাড়ি কিতকিত খেলছে
শাড়িতে ভালোবাসা,ভালোবেসে রকমারি
লালে লাল শাড়িতে মনে আবির
হলুদে হলুদ মন ভালোবাসে শস্যখেত
নীলে নীল ভালোবাসে নদী
সবুজে সবুজ ভালোবাসে কলাবতী
আকাশী আকশীতে ভালোবাসা আকাশে
সাদায় আমি শ্বেতশ্রী
ভালোবাসার রঙে ভরে গেছে
আলমারির কোনাকুনি
অনেক রঙ আলমারির ভেতর।
একশত ছাড়িয়েছে বুঝি।
হারিয়ে যাওয়া শাড়ির মাঝে
আমি একাকী?
একশত শাড়ি একশত রঙে রঙিন ।