শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮

নাসির ওয়াদেন


নাসির ওয়াদেন
      
অশ্মচক্র

দুখী দিন ক্ষয়ে ক্ষয়ে এলে
অন্ধকারের জরায়ু থেকে বেরিয়ে
আসে এক একটা শিশুদিন ,
রঙিন চশমায়
পৃথিবীর সবকিছুই রঙিল দেখে

আলো পিছলে  পিছলে যায়
পিতৃবিত্ত সম্পর্কগুলো ফ্যাকাশে ভাত
আর আলুনি ডাল হয়ে দৌড়ায়

কতদিন এভাবে চলবে ভাঙাসংসার ?

জীবনের অসমবিদ্রোহগুলি শক্তিশালী
মাটির ক্ষেত্রফল মজবুত করার চাহিদা
সোজা হয়ে দাঁড়ানো শরীরছায়া
বাতাস কেটে জামা সেলাই করে

ছায়া দীর্ঘতর হতে হতে অদৃশ্যহওয়া,,,,

অনাদবাহজীবন, কাঁধে লাঙল
মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করছি প্রত্নঅশ্মচক্র
শরীরে প্রকৃত শ্রমগন্ধ শুঁকতে পাই

কালের নিয়ম গড়িয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে
নির্বাক মিশ্রসভ্যতার ক্ষত্রদন্ডে
সভ্যতার উপোসী চাঁদ বর্বর আকাশে
কীভাবে সারাবে অসভ্যতার ক্ষত ?

                  




গৃহযুদ্ধ

কষ্ট খেতে খেতে রাত পার করে বাঁচি
দুহাত দিয়ে মাখি বিবর্ণ মলিনতা
পৃথিবীর নঞবাচ্যে ঈশ্বর প্রতিক্রীয়াশীল
রাজত্বের বদল ঘটে নিয়ত, সর্বদা ---

রাতের ঘনত্ব দুধে মিশে আমানি
সকালসন্ধ্যে দুবেলাই করি ওভারটাইম
দুটো পয়সার চেষ্টায় খাটি মাগ্ ছেলে
দিনের আলো রাতের চেয়েও হিম

শরীর বোঝে ব্যথা, দারিদ্র বোঝেনা শরীর
অপুষ্টি বাতাস শ্বাস নিতে জানে, বিশুদ্ধ,,,
হাড়জিড়জিড়ে ভরসা নিয়েই আছি বেঁচে
দু'পয়সা কামাই বলে বাধেনি ঘরে গৃহযুদ্ধ

      





দেওয়ালের কারসাজি

তুমি আর আমি মাঝখানে নেই প্রবঞ্চনা
রঙিন স্বপ্নের ভেতর বিভৎস দেওয়াল
খালি চোখে পর্দা টানে,ইচ্ছার রুচি,অরুচি
নিয়ে কাচের পূর্ণ গেলাসে স্বচ্ছতা খুঁজি

ভালবাসা বোঝে ঠিক কতটা জলের নীচে
নামতে পারলেই  মুক্তো পাওয়া যায়

কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না বাতাসে নীলগন্ধ 
অথচ বাতাস নিশ্চুপ, বুকে বিভক্তির ছায়া
কৌশলী হাওয়া বইছে বিনম্রে, অস্থির স্বভাবে,
হাতের তালুতে লুকানো স্ববিরোধী কথা

হঠাৎ হয় না কিছুই, কিছুতেই মিলে না সংঘাত
দীর্ঘশ্বাসতির স্বস্তি ছুঁয়ে যায়,শূন্যতার ধারাপাত
                       
              





একান্নবর্তীর উদ্দেশ্য

আমরা পরস্পরের জড়িয়ে থাকা একান্নবর্তী
অথচ বিদ্বেষগুলো মাঝেমধ্যে এসে উসকায়
কান খাড়া করে শোনে বিদ্রুপ বাণী,আড়ালে

বিশ্বাস বুকে বাসা বাঁধে, কিছু অবিশ্বাস
দৌড়াদৌড়ি করে নীরবে দিনান্তর,কালক্ষয়

বিচ্ছিন্নতা উপান্ত হয়ে একেলা পথ হাঁটলে
নিজের গায়ের লোম জ্বালিয়ে ক্লান্তি পোড়াই
এভাবেই পুড়তে থাকি  অনলে-সলিলে মিশে ,,,

তোমার হাতে ভালবাসার বারুদ জ্বলে উঠলে
বাজি ফাটে উচলানো অন্ধকারে , নিশিথে

পুড়ে পুড়ে দহন শেষে জোট বাঁধে একান্নবর্তিতা

            





পহর শেষের পর

সারাদিন খেটে খাওয়া,কাজে কাটে বেলা
বৃষ্টির ধোঁয়া চোখ, নেই  কাজে হেলা

মানুষের শব্দ শুঁকি,গন্ধে ভেজা মাটি
হাড়ভাঙা অন্ধকারে খুঁজি ইতিউতি

বহুকাল বেঁচে আছি আলো অন্ধকারে
শ্রমঘামে ভেসে চলি করুণা জোয়ারে

এখন সন্ধ্যাবেলা চাঁদহীন মেঠো ভাঙারাত
দুহাতেই স্বপ্ন মাখি,স্বপ্নেরা খেলে সারারাত

পাশের বাড়ির মুখ , উন্মুখ সজল দৃষ্টিতে
অকারণ জ্বালাতন  চলেছে  ফোনবৃষ্টিতে

বিশ্বাসের সোহাগ ঝরে বাতাস স্নিগ্ধ,সুস্বাদ ,
ভরসার দৃষ্টি সরে ভাসে এক কুয়াশা বিষাদ

সারাবেলা খাটাখাটি নিত্য ফিরি ঘরে
কালশিটে দাগ বোঝে কী যাতনা শরীরে

ফেসবুকে, ফোনালাপে যে আলাপ জমে
পহর শেষের পর প্রেরণার গান যায় থেমে