বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮

ইন্দ্রাণী সরকার


ইন্দ্রাণী সরকার

গল্পকথা

রূপশ্রী তোর দ্বিতীয় ভালোবাসা ছিল
বহুজন এসে তোর থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছে
কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারে নি ।
রূপ সবাই ত ছেড়ে গেছে তুই এখনো রয়েছিস তাই না ?
কিছু ঝর্ণা নদী পাহাড়ের গল্প বল
কিছু আহামরি পুষ্পস্তবকের স্বপ্ন
কিছু রাখালিয়া বাঁশি বা কিছু জোনাকি
মেঠো পথে অথবা শহুরে রাস্তায় ঐ হেঁটে যাওয়া
ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের গল্পকথা
অথবা রাতের বেলায় বেলগাছে বসে থাকা সেই ব্রহ্মদত্যি
এমনি কিছু বল যেমন এখন বলিস
দেখ আমিও ত হাঁটি হাঁটি কবিতা লিখি
তুই এমনি থাক যেমন আছিস
এতটুকু বদলাস না !








মায়াকাজল

তুমি কিছুক্ষণের জন্য চোখের আড়াল হলে
একরাশ আঁধার আমার কাজল হয়ে যায়
তোমার হাসির মুক্তোগুলো কুড়িয়ে যে মালা
গেঁথে রাখি তা কান্না ধুয়ে ঔজ্জ্বল্য হারায় ।
ভুরুর ছায়ে যে তোমার পদ্মপাপড়ি দুটো চোখ
তা যেতে যেতে রোজ কি ভাবে হারিয়ে যায়
আমি অবুঝ হয়ে ভাবি কটা গান তুমি আমায়
নিয়ে গেয়েছ আর আমি কটা গান কখনো
গাইতেই পারলাম না তুমি সামনে নেই তাই ।
সেদিন যখন তুমি ধরাছোঁয়ার বাইরে হারালে
সেদিন যেমন কেঁদেছি তেমন কান্না প্রায়ই আসে ।
একদিন তোমাকে অনেক আদরে ভরিয়ে দেব
তুমি তখন আমার কোলে ঘুমপাড়ানি দেশে ।
তারপর থেকে কখনো আর না বলে যেও না ।








তোমার প্রতীক্ষায়

তোমার কথা ভাবলেই
কিছু শৌখিন মুহূর্ত
সামনে এসে দাঁড়ায় |

তোমার চিবুকে আঁকা
তারাদের নজর ফোঁটা,
মুখে চিলতে মায়াবী হাসি,
আমার আজন্ম বাঁধা পড়ে
তোমার জোনাক আলিঙ্গনে |

নরম রোদে হাসে মায়াবী মেঘ,
তুমিও আলেয়ার মত সরে যাও |
তোমার অপসৃত ছায়া দুচোখে
আমার মোমগলা অশ্রূ নামায় |
অহর্নিশি চেয়ে থাকি পথের পানে
তোমার আসার প্রতীক্ষায় |








রূপসী সাঁঝবেলায় তুমি

আলো আঁধারির পথ ধরে যেন
দেবদূত তুমি এলে ঘরে মোর |
তোমার শরীরের স্নিগ্ধিত ঘ্রানে
চন্দন সুবাসে ভরে যায় ঘর |
তোমার মাতাল করা ভালবাসা
বারবার টেনে নিতে চায় আমায় |
ভরে দাও আমার মন আর প্রান
তোমারি সিঞ্চিত অমৃত সুধায় | 
মোমের মত গলি অবিরত
তোমার উষ্ণ আদুরে পরশে |
আজ এই রূপসী মায়াবী সাঁঝে
তোমায় পাওয়া অদম্য অভিলাষে |








প্রাচীন প্রবাদ

রাত্রি গভীরতর হলে
প্রাচীন প্রবাদের মত
নশ্বর ঈশ্বর জেগে ওঠেন
অবসাদ মন্দিরে,
অশ্বথের নামানো
ঝুরিগুলিতে, গুঁড়িতে
ও লতানো গাছের ডালে ।
ঝাপসা হয়ে আসা ক্যানভাসে
বিস্তৃত দিগন্তরেখা ক্রমশ:
রাত নামে শহরতলীতে ।
শিরায় শিরায় উষ্ণতার
ধ্রুপদী ভাঁজে দৃষ্টির
সীমাবদ্ধতায় জন্ম নেয়
জারজ প্রজাতিসকল ।