রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৮

শ্রাবণী সিংহ


শ্রাবণী সিংহ

শরত লিখি

বিড়াল ডেকেই যায় ...
কি করে শরত লিখি?
ব্রেইল থেকে মুছে যাচ্ছে আগামীর শব্দগুচ্ছ,
মুথাঘাসে  অনুপ্রাসে
একই শব্দ কেন বারবার আসে?
বানভাসি... বানভাসি!

সদ্য বিধবার সাদা থানের কাছে  উজ্জ্বলতা হারায় যত কাশফুল...
কি করে শরত লিখি?

আবার সব কেমন উলটে পালটে যাচ্ছে, উৎসবের সাজ
হাতে ধরিয়ে দিয়ে  আচমকাই চলে যাচ্ছে দমকা হাওয়া,
হোঁচট খাওয়া সানন্দ ছেলেটা  আবার ফিরে আসবে,
ডাঁটাশুদ্ধ পদ্মকলি হাতে,পানিফল

উঠানে রঙ্গোলী রেখে কি ঘুমিয়ে পড়া যায়?

এসো শরত লিখি ..







এক বাউন্ডুলের রূপরেখা

আর এটাই সত্য যে
ছান্দসিক  বোঝে না এক ছন্দ ছন্দহীনতার মধ্যেও!

সরল আঁকাজোকায় 
নিরীহ সমকোণে ভাদ্রের বারান্দা আমার,
ইথারে ভাসে চাবির কান্না-
বন্ধঘরের তালা খোলার চেষ্টা করে কেউ,
ব্যথার পুতুল গোপন তোরঙ্গ থেকে পেড়ে আনে সে,
পোড়ামাটির বাঁশিটাও ...

আমি তো ঠিক তৈরী হয়নি,
নিরীহ দিলখুশ প্রবণতা
আমার সমস্ত হিজিবিজিতে
এক বাউন্ডুলের রূপরেখা।







অন্য ঘরের খোঁজে

শেফালীর নদীতে  জেগে আছে কুমিরের পিঠের মত 
                                      নুড়ির বন,
টঙ ঘরে ইনফ্রায়েড বিকেল...
সন্ধ্যার গোয়াল থেকে ডেকে উঠছে
বাছুরের মায়ের গলার ঘুঙুর।

যাদের অন্য দেশ যাবার নেই, তারাই
    ঘরের খোঁজে থাকে নিবিড় পাতা-ছাওয়া
হাওয়াকলের পায়ে বেড়ি নেই, 
তবু
সহজাত গন্ডী ছাড়িয়ে যাওয়ার অধিকার রাখে নি
ভিন-রঙা শহর প্রান্তের।

ঘরামি ঘর ছেয়ে গেলেও বহুগামিদোষে দুষ্ট মন পড়ে থাকে
অন্য ঘরের খোঁজে ।







সুতো ছেঁড়া টান

একটাই ঘুড়ি...পাড়াময় ঘুরছে
ভোকাট্টা ঘুড়ির পিছনে সহর্ষ উল্লাস,
যেন প্যাভিলিয়ন জয় করে ফিরছে!

অন্যমনস্কের মত ফিরি আজকাল।ধারে কিনি জানলা।
ঘুড়ি দেখার সাধ আমার অনেকদিনের।

দূর ছাই কি যে হল!
ভোকাট্টা ঘুড়ি গোঁত্তা খেয়ে সিধে এই জানলায়...
সুতো-ছেঁড়া টানটাই কখনও পিছুটান ছিটেল প্রেমে
লাটাই হাতে  সুতোর প্রান্ত ইচ্ছে করে কেটে দেওয়া

এই খেলাটায় কেন জানি মন বসছে না।







এই বহমানতা

দাঁতে কাটছি আমরাই আমাদের বিদেহী উচ্চারণগুলো

পাখিদের কিচির ফেটে ভোর কোথায়?
আশ্বিনেও চৈত্রের দাবদাহ ..

সুর্য থেকে সরাসরি আগুন ধরালো কেউ,
                  আকাশের দিকে না তাকিয়ে।
বিপর্যয় দেখেও না দেখা
গা সওয়া হয়ে গেছে ।