রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৮

গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্য়ায়



গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্য়ায়
  
তুমি দেবদারু হও   

তুমি  দেবদারু বৃক্ষ হও
পাখিরা ছড়াক সে খবর
কবিরা প্রত্যেকে দেবদারু
পাখি তার প্রথম অক্ষর ।
তুমি দেবদারু বৃক্ষ হও
যাও উপবীত আহরণে
জ্বালো তুমি যজ্ঞের আগুন
পাহাড়তলিতে উপবনে ।
তুমি দেবদারু বৃক্ষ হও
বেদুইন তোমার খড়ম
এই কাষ্ঠে এই অভিজ্ঞানে
লেগে আছে নারী ও সংযম ।




                       


সতী

আমার সহবাসে শুদ্ধ হবে তুমি
বলবে সব লোকে এই-ই সতী
যৌন লালসায় এ নয় ধর্ষণ
এতো যুগান্তর স্বাধীনতা

যুদ্ধপ্রকরণ পাল্টে ফেললাম
শত্রু শিবিরে যে লালসাবিষ
ছড়িয়ে দিতে পারে ঐক্য ভেঙ্গে দেয়
সেই শহীদ হয় সেই সতী।

আমি নাহয় শিলা থাকবো চিরকাল
লক্ষ শাঁখে উঠে তোমার নাম
তোমার শয্যায় আমার সহবাসে
বেঁচে উঠুক দেশ চিরহরিৎ।



                 




দিব্যজ্ঞান

একটি পালক হারিয়ে গেলে পাখি কোনো দুঃখ পায় না
এটিকে সে তার স্বভাবগত সাংসারিক রীতি মনে করে
আমিও এখন পাখির এই স্বভাবটিকে রপ্ত করার চেষ্টা করছি
আর এতেই মনে হচ্ছে পাখি হওয়াটা একটি লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে
তখন আর হিমালয় বা কোনো  আশ্রমের খোঁজে বেরোতে হবে না
কারণ প্রত্যেকটি পাখির বাসা এক একটি বিশুদ্ধ আশ্রম








উদ্দালক চল

এই বাতিস্তম্ভ এই ম্যাজিক লন্ঠন নিয়ে চল
উদ্দালক চল যাই শস্য সংরক্ষণে
পাদভূমি থেকে শীর্ষদেশ
ডুবে যাচ্ছে শস্যের শরীর
শস্যের বালককাল, শস্যের বহতা স্রোত
চল সমবেত যাই ক্ষয়িষ্ণু মাটিতে।
অন্তত একটি শিষ গোলাজাত করি
উদ্দালক তুমি
শস্যপিতা হও ক্রান্তিকালে।








মেঘের বাড়ি

দূর দূরান্তে ছুটছে গাড়ি
আমরা যাচ্ছি মেঘের বাড়ি
মেঘ বলে সব কোথায় ছিলি
       আমার চিঠি কখন পেলি?
       চিঠি কোথায় মেঘের ডাকে
       শুনতে পেলাম গলির ফাঁকে
শুনতে পেলাম চৌরাস্তায়
বলছো তুমি আয়রে সবাই
পালিয়ে গেছে ডাক হরকরা
তোদের জন্য রান্না করা
তোদের জন্য উঠোনে ঝাঁট
তোরাই খুলবি মেঘের কপাট
তোদের জন্য সন্ধ্যাবেলা
বিষন্ন এক প্রদীপ জ্বালা
যখন তখন বর্ষা আসে
চোখ ভিজে যায় নির্ণিমেষে।