শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১৮

শাশ্বতী সরকার


শাশ্বতী সরকার

বিবেক, তোমাকে..

কাল সারাদিন পাথরবৃষ্টি হয়েছে তোমার ওপর

ফুল বৃষ্টিও হয়েছে অযথা

আমি ছিলাম পাথরের দিকে

তীব্র পাথরের কুচিগুলি ছুটে এসে

ঝাঁঝরা করে দিয়ে গেছে বুক

তবু বলি ক্ষমা কোরো, ক্ষমা কোরো

ওদের চৈতন্য হোক,

ওদের মুক্তি হোক।







খেসারত

সারাজীবন ভুল করতে করতে আমাদের

সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া

ধাক্কা খেতে খেতে এবং হয়তো বা

ধাক্কা দিতে দিতেও সামনের পথ চলা।

জীবনে দু-একটি প্রয়োজন ছাড়া

এই জিহ্বা মিথ্যে বলেনি কখনও

তবুও যে কত কাদা গায়ে লাগা!

কাদা ধুতে ধুতে, কেবলই কাদা

ধুতে ধুতে জী্বনতরী বাওয়া।

তবে কি আর মিশব না জনজীবনে?

শুধু দূর থেকে দেখে যাব তোমাদের

হাসি-কান্না আর পথ চলা?

এখন আমাকে যারা ডাকে আয় আয়

আমি ছুটে গিয়ে দোর দিই।

ও অমল শিশুরা, শুধু তোরা আয়,

আর কারো কাছে আমি যাব না।

আত্মীয়, বন্ধু, স্বজন কেউ কারো নয়

আমার সৃষ্টিরা ছাড়া আমার আর কেউ নেই,

আমিও বোধহয় এখন আর কারো নই।







ভুলভুলাইয়া

সহজের ডাক যে একবার পেয়েছে,

জটিল ভুলভুলাইয়া তখনই এসে

ঘিরে ধরেছেন তাঁকে

সহজ যে শিশু প্রাণ, কোমল তনুখানি,

আহা! কত যত্নেই না খেলা করে

জটিলের বুকে। কোলাহলরত উন্মাদ

কুটিলেরা আজও সে ভুলভুলাইয়ায়

বেপথু, বেজান...






বাস্তুহারা নাগকন্যারা

এ ঘোর বর্ষাকালে খোলস ছাড়িয়ে বেরিয়ে

পড়েছে কিছু বিষ কন্যারা

নয়ানজুলির জলে ভরা গর্ত ছাপিয়ে তারা

বেরিয়ে পড়েছে শহরের পথে পথে,

সম্ভাব্য কোন আদম ও ইভের জন্ম দেবে বলে

নগরের দেয়ালে দেয়ালে তারা টাঙিয়ে

রাখছে ইঙ্গিতবহ কোন প্রেমকাহিনী-

লৌহবাসরের ছিদ্রান্বেষী নাগকন্যারা

এখন কু-বিশাল সর্পমার্কেটের যোগানদারের

ভূমিকায় অবতীর্ণ...






দালাল

ওই দেখুন ধর্মাবতার!

আমার বিশ্বাসগুলোকে খুন করে কেমন

পালিয়ে যাচ্ছে দেখুন!

দু টুকরো ছুঁড়ে দেওয়া

মধু মাখানো রুটির আশায়

আমার বিশ্বাসগুলো পাচার হয়ে গেছে ক্রমাগত,

কাঁটাতারের সীমান্ত পেরিয়ে

এখন তারা অনিকেত বসন্ত নাবিক -

ঘর আছে অথচ ঘরে ফেরার

তেমন কোন তাগিদ নেই আর!