শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১৮

শংকর ব্রহ্ম


শংকর ব্রহ্ম

মুক্ত আকাশ

তুমি আমার ভোরের আকাশ,
                            তুমি আমার মুক্তমন
তোমায় পেয়ে ফিরে পেলাম,
                        ষাট পেরিয়ে নবযৌবন
এখন আমি ফুটতে থাকি,
                             টগবগিয়ে কবিতায়
জানি তোমার এ'সব কথা,
                     মোটেও জানার কথা নয়
তবু আমি তোমার কথা,
                         ভাবতে থাকি অনুক্ষণ
সে'সব কথা কেউ না জানুক,
                          জানে আমার সুপ্তমন
তোমায় নিয়ে কল্পনাতে,
                 কোথায় না আর যাই আমি
আগ্রা,প্যারিস,রোম কিংবা
                              সহস্রবার বৃন্দাবন।

তুমি আমার স্বপ্ন সাথী,
                   নস্বপ্নে আসো যখন চাও
তুমি এ'সব জান না তাই ,
             জানলে তোমার বাড়ত ভাও
এখনও তোমায় ভাবতে গেলে,
                     মনে কেমন ঢেউ খেলে
ঢেউয়ের টানে দুলতে থাকি,
                      মাছের মত পাখ মেলে
দুলতে দুলতে তোমার কাছে,
                 পৌঁছে তো চাই অনায়াসে
চোখে আমার মুক্ত আকাশ,
                    স্বপ্নে তোমার মুখ ভাসে।






ঋণ

তুমি তো সমস্ত ঋণ শোধ করে, যেতে চেয়ে ছিলে
অথচ বিষণ্ণ ভয় তোমাকেও গ্রাস করে নিলে,
তুমিও চিন্তিত হতে, মনে মনে অস্থির সময়
আমার হৃদয় জুড়ে ততখানি ঘটে যেত ক্ষয়।

অসংখ্য অস্থির শব্দ, তোমার নিকটে এসে
ছটফট করে না তো, চুপ করে পাশে থাকে বসে,
আমি তাদের বোঝাতে পারি না, একগাল হেসে
তুমি তো সমস্ত দেনা শোধ করে দিতে চেয়েছিলে,
শব্দগুলো ঋণদাতা, আমার তো মনে হয় তাই
তাদের আমি রূপকের মাধ্যমে
                       আমাদের জীবনের গল্প শোনাই।

শুনে তারা হাসে না, কাঁদে না,
                                 বসে থাকে স্তবিরের মতো
যেন বা তোমার সমস্ত ঋণ,আমাকেই
           আরও আগে শোধ করে দিয়ে দিতে হত।






কবিতা

অনেকেই নিষেধ করেছে
                          অথচ বারণ শুনিনি আমি ,
কবিতা, হে প্রেয়সী আমার
             তোমাকেই সর্বস্ব পণ করে
                        আমি এক জুয়ায় মেতেছি।

অর্ধাহারে অনাহারে কেটে গেছে দিন
তবু আমি তোমাকে ছাড়িনি
                           আসলে ছাড়তে পারিনি,
অথচ যারা সব প্রিয়জন ছিল
       আমার এই দুর্মতি দেখে
       আমাকে পাগল ভেবে করুণা করেছে।

আর সব ধীরে ধীরে সরে গেছে দূরে ,
           আমাকে মুক্তি দিয়ে নির্জন করেছে।

যদি আমি মৃত্যুরও মুখোমুখি হই
                 তোমার কারণে ,
                                    হে প্রেয়সী আমার
কবিতা সুন্দরী
               তোমার করুণ শঙ্খে ওষ্ঠ রেখে
                  মরে যেতে রাজী আছি আমি।






বইছে তুফান

দেশে যখন বইছে তুফান ,
                            নদী এখন খরস্রোতা
                             লেগেছে বান
                              লাগিয়ে জান বাজি
হাওয়ার মুখে পাল তুলে দাও
                               ওগো সুজন মাঝি।

নিরুদ্দেশের পথে যাত্রা যাদের
                    ডুববে নাকি ভাসবে তরী
        ভাবলে এখন চলবে নাকি তাদের ?
      
   বিপদ আপদ তুচ্ছ সেটা মন মানে না
জীবন নদীর শেষ যে কোথায়
                                   কেউ জানে না।

দেখছি নদী উল্টো পাল্টা খরস্রোতা
            হয়তো কোথাও ভাসিয়ে নেবে
তাই বলে কি এই তুফানে তরী ছেড়ে
              হঠাৎ কোথাও পালিয়ে যাবে ?






স্বর্গলোক

তুমিই আমার মিষ্টি সোনা, তুমিই আমার মন
তোমার উপর রাগ করে আর থাকব কতক্ষণ?
সুজন আছে অনেক আমার, মিষ্টিসোনা এক
মনকে বলি, মিষ্টসোনার দিকেই শুধু দেখ।

অনেক মায়ায় গড়েছি এই সোনার সংসার,
তুমি আমি ছাড়া সেথায় কেউ থাকে না আর।
একটি শিশুর মুখ উঁকি দেয় হঠাৎ অপলক,
তোমার ভিতর পৌঁছে গেলেই সুখের স্বর্গলোক।

বাতাস জানে সে সব কথা,
                                         আকাশ শুনে হাসে
হাস্নুহানার গন্ধ এসে বসে আমার পাশে,
আমি তাকে তোমার কাছে পাঠিয়ে দিতে পারি,
হাস্নু শুনে, বিশ্রি ভাবে হাসতে থাকে ভারী।

তোমার ভিতর মায়ার জগৎ থাকে বিলক্ষণ
সকল সময় সেইখানে যে থাকে আমার মন।
তোমার দিকে বিশ্ব জগৎ তাকায় অনিমেষ
একটি নতুন মুখ উঁকি দেয় হঠাৎ কেমন বেশ।