বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬

রাবেয়া পারভীন



রাবেয়া পারভীন

অলৌকিক ফুলশয্যা
তোমার ফেরার অপেক্ষায়, কি এক অদ্ভুদ আকর্ষণে
অরণ্য-সাগর,আকাশ-পাহাড়, মহাদেশ
অতিক্রম করে ফেলি পলকে
প্রায় মৃত একটি নদী অসাড় পড়ে থাকে
সযতনে, সংগোপনে দুজনের মাঝ খানে।।
চাইলেই কি মুছে ফেলা যায় স্পর্শ দাগ!
দীর্ঘশ্বাস, অধরা বিষাদ আর অফুরান শূন্যতা সঙ্গি করে
চোখে পড়েছি বিষন্নতার কাজল
মৃত্যু অনিবার্য হবে যেদিন কথা আছে কিন্তু যাবো একসাথে,
সোনালি বৈভব ফেলে ধুলোবালি মেখে মিশে যাবো নেই এর সাথে
সময় হয়েছে চলো রওয়ানা দি
ভেবে দেখো আবার যাবে কিনা অধমের সাথে?
যদি থেকে যেতে চাও, থাকো তবে
আমি চলে যাই কেবল চলে যাই একলা নির্জনে।।
একবার ইশারায় ডেকে দ্যাখো
টোল-পড়া গালের হাসি নিয়ে নিজেকে নতুন করে সাজিয়ে
ফিরবোই আমিআমার জন্য অপেক্ষা করো,
তোমার সাথে মেঘরোদ্দুর লুকোচুরির অবসান শেষে
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াই হবে আমাদের অলৌকিক ফুলশয্যা।






আমার নিঃশব্দ কথা
দেখা হবে একদিন,
ভীষণ কোন রোমান্টিক কবিতায়
শেষোপাখ্যানের মধুর মিলনে কিংবা
বিরহের অগ্নিজ্বালায় ।।
দেখা হবে,
গ্রীষ্মের রোদ্দুরের উদাস দুপুরে
একাকি বসে থাকা ...
কিংবা হেমন্তের পাতাঝরা বিকেল
নীল অপরাজিতার ঘ্রাণে ডুবসাঁতার
নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে উড়িয়ে তোমার চুল
শুষ্ক অধরে গভীর অনুরাগ ।।
দেখা হবে--গল্পও অফুরান
হৃদয়ের গভীরে জড়িয়ে
বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দিয়ে
ভালোবাসার নিভৃত আলিঙ্গনে
তোমার ঠোঁটে আমার নিঃশব্দ
হাজারো না বলা কথায় ।।






হৃদপিন্ডে রক্তক্ষরণ
পৌরানিক চুম্বন সমাপ্ত হলে দীর্ঘশ্বাসে বাতাস ভারি হয়
শুক্রাণুর আন্দোলনে  অন্ধকার  ক্রমশ ঘনীভূত হতে রয়
শূণ্য হাতে ভীষণ একা দাঁড়িয়ে সম্মুখে উত্তাল সাগর
ধর্ষিতা নারীর আলুথালু আঁচলে আগুনঝরা অভিশাপের শোক
তীরন্দাজ পাখিটার হৃদপিন্ডের রক্তক্ষরণ
অনাকাঙ্ক্ষিত প্রস্থান!
এক গুচ্ছ বেলী সৌরভ ছড়াতে যেয়ে দলিত মথিত হয়েছিলো
 
আজ তাই, শিলার মত কঠিন আর মরুর মত রুক্ষ
ফোন দিতে গিয়েও থেমে যায় তর্জনী
কোনো বাহানা খুঁজে পাইনে
আমার বিষণ্ন দিনগুলো তোমাকে পাগলের মত খোঁজ
জীবন সেতো সর্বদাই মৃত।।






করুন সানা
সুখ  দরজায় এসে কড়া নাড়ায় সজোরে     
                                      
দরজায় গিয়ে শেষ বিদায়ে  পেছন ফিরে তাকাই
                                             

পিছুটান ছিঁড়তে না পারি থমকে দাঁড়াই
                                       

ভেতরের মানুষটি বলে উঠে সময় এখনো হয় নাই
                                           

তাই আবার পিছনের দিকে পা বাড়াই
                                         

ক্রন্দনরত চোখ চির সঙ্গী করে সুখকে চিরতরে হারাই
                                             

স্মৃতির-বাতাসে ভাসে আজ শ্যামের করুণ সানাই ।।