বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬

মামনি দত্ত



মামনি দত্ত

ছদ্মরূপ
ক্ষাকুঞ্জের দিকে ভেসে যায় আমাদের লোলুপতা
চিরহরিৎ খোঁজে সারারাত টমটম ছুটে যায়...

আমাদের থেমে যাওয়া থেকে জেগে ওঠে সুবর্নগোলক।
চোখের দৃশ্যরূপ থেকে ভেঙে পড়ে শৃগালের অনুতাপ।

স্থির পলিজাত দিন হাওয়ার পালে কারুখচিত চিত্রপট
টুকরোটুকরো থেকে অবয়ব পেলে
আমরা ভুলেযাই দ্রাক্ষারস অধিকার, সবুজবর্ণ নির্মাণ ইত্যাদি।

আমরা তখন সায়াহ্ন বৃত্তের মধ্যবর্তী হয়ে
তুখোড় এস্রাজ বাদক হওয়ার ভান করি পুনর্বার দ্রাক্ষার নেশায়।

--------------------






ভুল আবহ

হাওয়ার ভেতর সংকেত জমে ওঠে
ঘর্ষণে স্ফুলিঙ্গ যেটুকু আলো দেয় তা অতীব প্রাচীন
আমরা সারিবদ্ধ হয়ে চলে যাচ্ছি নতুনের খোঁজে
অথচ মাটির খবর রাখার প্রয়োজন করিনি কোনদিন।
পায়ের পাতায় ছড়িয়ে থাকা ধূলো হাওয়ায় মিশে যায়
বিগত থেকে আগত দিনের দিকে
তুখোড় দিকনির্দেশক মানুষ দিক ভুল করে আজীবন
সংকেত বইতে বইতে।

--------------







মৃত্যুর রঙ নীল

আয়ুর মতন ফুরিয়ে আসছে বৃষ্টির ঘনত্ব...
অন্ধকার ঘরে ভেসে থাকে যেটুকু মেঘ
তার উপর পা রেখে চলা আসলে
একটি রঙিন স্বপ্ন।

ঘুমের প্রদেশ জুড়ে মৃত্যুফুল ফুটে আছে
এখানে যেকোন প্রাণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রেখেছি।

একলা ভুবনে মেঘ কেটে মাঝেমধ্যে চাঁদ উঁকি দেয়...

কখনওবা রিমঝিম ধ্বনিরেখায় পা রেখে
জলসাঘর আঁকি।
মৃত্যুর নাম নীল অথবা আমি একাকী।








বৃষ্টিসাজ

জানালার কাঁচে ঘুমিয়ে আছে জলের আলপনা সাজ,
উষ্ণতাসে মুছে গেছে বাদল হাওয়ায় বিগত এবং আজ।

এখন মেঘেরডাকে ময়ূর রঙ ছড়িয়ে যায়
হৃদয় প্রপাতে।
ক্ষতের শীতলতা নিপুণ ঢাকি বৈরাগী দু'হাতে।

মাটির গন্ধ জাগিয়ে রাখে
আর আমি ঘুম জড়ো করি প্রাণপণ।
জানালার দিক থেকে নেমে আসা জলে
একদা ভেসেছিল আমার অনুরণ।।







সীমাবদ্ধ

তোমাদের বলতে চেয়েছিলাম -
নুপুরের খুশবু
মাটি মেখে রাখে আজন্মকাল।

যে পায়ের পথ সীমাহীন নয় সেই পায়ের গান
থেকে বিষাদ জন্ম নেয়।

আমি বিষাদ জমাতে জমাতে
আকাশ ছুঁয়ে দশদিক প্রদক্ষিণ করে ফিরে এসেছি ক্ষুধার্ত।

ভাতের থালা নিঃস্ব বৃষ্টিজল রাতে...
এতো বৃষ্টিবহুল দান আমি তো চাইনি,
খানিকটা জুঁইফুল ঢেলে দিতে পারো?
হাহাকার মাখা পাতে!

------------------