নুরুন্নাহার
শিরীন
শ্রাবণজলের
কবিতা।। 
************* 
এক।। 
প্রিয় শ্রাবণ, তুমিতো জানো
আজজাল
আকাশের মতিগতির নেইতো তাল। 
দারুণ মেঘগুলিকে জ্বালিয়ে
পুড়িয়ে দিয়ে
অনায়াসেই গুমোট আসে নিয়ে। 
কে বোঝায় আকাশকে এই তামাশা
ভালোনা - 
কে তার ধরতে পায় মতিগতির
ঠিকানা!
সাধ্য থাকলে দিতাম তারে জরুরী
তলব - 
যাতে সে তোমার শ্রাবণিয়া জলে
করে কলরব! 
দুই।। 
এই দেখোনা আষাঢ় মাসেও সে
জ্বালিয়েছে দেশ - 
মেঘ যতই ঝরতে চেয়েছে সে
পুড়িয়েছে বেশ। 
কাঁহাতক এত ফাজলামো সহ্য হয় -
কাল বদলে গেলেও বদলায় চাঁদ বা
হৃদয়!
এদিকে অদিনে ঠিক আকাশফাটা
জলের তোড়ে - 
কোকিলাদের বসতি দেয় লণ্ডভণ্ড
করে!
কি বলি তাহার উল্টোপাল্টা
খামখেয়ালির কথা - 
আষাঢ়েও লেখা হয়নিগো একটা
কবিতা।
তিন।। 
ধকধকে দিনগুলি রাতগুলি বেশ
হতো যদি আজ - 
বৃষ্টিকাব্য হয়ে ভেসে যেতো
ফেলে সব কাজবাজ। 
যদি শুকনো নদীর ধারে তিরতিরে
জলরেখা - 
দেখেই হঠাৎ মনে আসে সেই সে
প্রথম দেখা!  
প্রথমালোকের ছিপছিপে আভাময়
ছবি - 
আজও কারও কাছে সোনাঝুরি রবি!
কত কি বদলে গেছে সময়ের স্রোতে
- 
শুধু একটি কবিতা হয়ে আছে
নদীটি কোনওমতে।
চার।। 
অথচ এমনওতো হতে পারতো হঠাৎ - 
না চাহিতেই দুয়ারে আকাশের
করাঘাত!
বাতাস বলতো হেসে - কিগো, মন ভালো হলো? 
আকাশও হৃদ্যতায় শুধাতো সঘন -
আজ কি কবিতা হলো? 
আমিও এমন দিনে তারে মন খুলে
বলতাম  - 
সাধগুলি ডানাময় ধূসর মেঘলা
করে তুলতাম। 
অথচ এমন হয়নাতো আর।
ওগো ও ঊষর মেঘ কি হলো তোমার! 
পাঁচ।। 
তাই কি শ্রাবণে - 
পঞ্চতপা দগ্ধতার বনে - 
প্রেমিক-প্রেমিকা ধায় ...
যেন কবেকার মুগ্ধতার গান গায়!
গানগুলি চারপাশে রেশ রেখে যায়
...
ছুটন্ত পৃথিবী তোমার কি
তাহাতে তেমন আসে যায়!
শুধু শ্রাবণ চেয়েই কারও-কারও
হৃদয়ের দিন যায়। 
তাপিত জলের মতো চোখের অধিক
চোখ ভেসে যায়।
 
আষাঢ়। ১৪২২ বঙ্গাব্দ। 
    ঢাকা। বাংলাদেশ।
