বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

বিকাশ চন্দ


বিকাশ চন্দ

হৃদয়ের কাছে উষ্ণতা

রাস্তার উপর গাড়ির হুটার শব্দে কত শরীর কত দিন
কে কার জীবন ফেলে চলে যায়
দেখার ইচ্ছে করে না আর---
সুমধুর বন্ধুত্বের কী ভীষণ জরুরী দীর্ঘশ্বাস
তবুও বিমর্ষ সময় প্রতি দিন অপেক্ষায়
পরাগে পরাগ মেলানো জীবনের সুর ঘাসে কাশফুলে
বাতাসের ভেতরে কত না প্রাণের গোপন অভিসার।

শরীরে কোথাও তো ছিল বনতলী রেখা
জন্মসূত্রে বন মৃগ নামে জলে হৃদয়ে পিপাসা,
বিদীর্ণ বুকের কষ্টে জলে নামে হরিণ রমনী---
সমস্ত পথের সন্ধান জানে না অচল শরীরের পথিক,
আঁজলা ভরে জল পানে শ্বাসে মৌণ অভিসার---
যত না হৃদয় পোড়ে পোড়ে বেশী মরমি সোহাগ,
অচঞ্চল সময় থাকে না স্থির---
কিছু থাকে শ্মশান দহন কিছু সমাধি বরণ।

তবুও তো ভালোবাসা খুঁজে ফেরে আলো সুখ---
পাখিরাও দিব্যি আছে শাখে সখি গানে,
যতটা ইচ্ছে থাকে পাঁজর ভূবনে নিরন্তর---
তবুও তো ফিরে যাওয়া রাত রতি কথা
কেবলই আগলে আছি হৃদয়ের কাছে উষ্ণতা।







নিদ জাগরী প্রাণ

সে দিন ছিল হঠাৎ মেঘে ভেজা বীজ বপন
পাশাপাশি উষ্ণ শ্বাসে কেবলই দুঃখ রোপণ,
কেউ জানেনা সন্তর্পণে ঘিরেছে অকাল বোধন
বৃষ্টিগুলো বরফ হলে বৃক্ষ বুকে অরণ্য রোদন।

ডাগর চোখে খোঁজার সময় কাউকে খুঁজে পায়---
অভ্র কুচি বৃষ্টি তখন মেঘ বরণী চুলে বিষণ্ণ বিদায়,
সবুজ মাঠে থোড় ভরেছে সোনা রঙ সুখ দাপায়---
কতক স্মরণ সুখে দুখে জন্ম কথা জমিনের কি দায়।

ফুল ফসলের অঙ্গাভরণ রূপে আহা শরীর নাকি নদী--- 
দু’কুল প্লাবন জোয়ার ভাঁটা ক্ষেতের দোলন কী শরীরে,
কার শরীর আজ কার কফিনে কেবল ভাগ্যাহত যদি---
ঝলসানো মুখ দেখেছি সেও তোমার চোখের গভীরে।

ভাবনাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে তোমার কান্না নাকি গান---
ওড়াউড়ি পাখির ডানায় নরম পালক নিদ জাগরী প্রাণ।







চেনা বীজের অঙ্কুরে

রাত বর্ণ বছর ভর উত্তাল সমুদ্র গভীর নীলের সীমানা
তবুও জন্মকথা কেউ বলেনি শুদ্ধ সন্তরনে,
গ্রাম শহর সমূহ সীমান্ত পৃথিবী ভুলে গেছে লোকগাথা
দিনেরও আঁধার এখন শূন্য পথ ঘাট চেনা মুশকিল---
অথচ সূর্য আছে সবুজ গাছে পাতায় পাখিদের কোলাহল,
নীরব অযান্ত্রিক প্রসব বেদনা খোঁজে শুদ্ধ জন্মকাল---
বর্ষা ঋতু হাসছে ঝড়ের উদাত্ত ঋতি ভাঙ্গে জননী যাতনা,
সকল শক্তি তবু কখনো ভেজা ধান শীষে আদর মাখে গায়।

এ এক সময় টেনে ধরে আদিমতর বন্য লোভী বীভৎসতা---
হঠাৎই দে দৌড় প্রাণ হাতে চতুর্দিকে ছিন্নভিন্ন কোমল উদারতা,
কোন পথে গেলে চোখে পড়বে না অসময় মৃত্যু ফলক ---
সে তো ছিল একদিন কপালে অমরত্বের স্নেহ দাগ,
পাকা ধান শীষের মতো লক্ষ্মীরানী উঠোনে এলো চুলে---
মানি ওকে অন্নদা নিজের আলোয় উজ্জ্বল দুটো চোখ,
মাটি মায়ের রঙে তুমি তোমার আত্ম চরিত সূর্যের ভোরে।

যদি এসময় সব কথা হারিয়ে যায় তবুও জন্মান্তর---
হয়তো ফিরে আসা স্বপ্নময় তোমার গর্ভ গহ্বরে,
যদি পারি হৃদয় জোড়া ভালোবাসা রেখে যেতে পারি---
হয়তো বা সেই চেনা বীজের অঙ্কুরে যদি জন্ম কথা কয়।