শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

তন্ময় ধর


তন্ময় ধর

শীতের উপকথা


স্বপ্নের ভেতর হরিণের পা থেকে দৌড়াচ্ছি আমি
দংশনের দাগ কিম্বা অহল্যারাত্রি নিয়ে কিছু ভাবছি না
শুধু শুধু শীতে এসে পড়ছে ছুঁয়ে থাকা আরেকটা শ্বদন্তে
 কশেরুকায়

‘...এই বিষাক্ত তীরন্দাজি পেরোতে হবেই’
বিষন্ন অরণ্যের শাদা মথ
 ডিম পেড়ে যাচ্ছে মৃত্যুর চোখের পাতায়
উড়ছে

তোর ঘুমের ওষুধ এঁটো করে
 হেসে ফেলছে হরিণী
কিম্বা
 রক্তের দৃশ্যান্তর ও শূন্যতা
পাথরের আশ্চর্য শ্যাওলাকে শরচিহ্ন করে ফেললি তুই






নখের উপকথার উল্টোদিকে
শীতল হয়ে যাচ্ছে হরিণের জন্মচক্র
 কথাবীজ
আঙুলে লেগে থাকা
স্নান ও পুনর্মৃত্যু

সবুজ আলো দৃশ্য বদলাচ্ছে
নক্ষত্রের জড়তা থেকে দুলে ওঠা পুরুষ্টু অন্ধকার
দুধে-আশ্রয়ে-মৃগমথিত বুদবুদে  
    ঘুমপাড়ানিয়া


দৃশ্যমন্ডলে রঙ ছোঁয়ানোর ব্যস্ততায়
বোবা কান্নার শব্দ
রক্তের মুখোশ থেকে
 আয়ু হয়ে ভেসে ওঠা ফুলের ডাকনাম






উপকথায় বিঁধে যায় আরেকটা ব্যথার মৃত্যু-
অপাবৃণু-
পুড়ে ওঠা স্নায়ুপ্রান্তের খেলা
 দৌড়ের অভিনয়
চুপ

হরিণীর জন্মস্তর ভাসছে
অথৈ
গোলাপী ভিক্ষাপাত্রের বিশ্রাম থেকে
আহত ভিক্ষু
 ভূমিস্পর্শে শান্ত করে চোখ

শীতল মাছের জন্মচক্র
লবণ
‘...এ অরণ্যরাত্রি শেষ হতে আর কত বাকি?’
ঠোঁট টিপে রক্তের হাসি
মলাটের ওপাশে






আমি আর তুই আসলে উপকথা শুনছি না,
হাঁটছি না কিছুতেই
অক্ষরবৃত্তের মৃত্যুর বাইরে থেকে
তেতো জিভের সর্বনাশে
 ভিজিয়ে রাখছি জন্মস্তরাংশ

‘...কে এই শিকারী? অগ্নিস্পর্শক?’
বুনো গন্ধের পাশ থেকে
লুকোচুরি
 সদ্য মৃত্যু পেরোনো এক প্রাণীর ত্বক
  কাঁপছে, বর্ণিকায় ও ভাঙনে

পায়ের আওয়াজ থেকে ভেঙে যাচ্ছে
অন্ধ হরিণের তৃষ্ণার মৃত্যু
শ্লোক
‘...এই জল কি ঘুমাচ্ছে?’
রাত্রি আরও অসমাপিকা
তৃণশয্যায় গহন ঘাইমৃগী
নতুন এক মৃত্যু থেকে
তুলে আনে স্ফুলিঙ্গ ও মাংস
 ছায়া
‘বলো, কতদূরে ঘুমোচ্ছে ওই জ্বলন্ত শরীর?’






উপকথা চুপ।।
ধাতুযুগের প্রাচীন এক তীক্ষ্ণতার সামনে এসে
খেলা পেরিয়ে যাওয়া খেলা
অবুঝ সবটুকু পত্রবিন্যাসে
প্রাণসূত্র

আলোর তীব্রতা বাড়ছে
আরো বাড়ছে

আমি ছুটছি
তীরচিহ্ন বেঁচে উঠছে,
আর আলোর খুব কাছে এসে
বোতাম সেলাই করতে করতে তুই বলছিস
‘আজ কোথাও রক্ত নেই...’