বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭

নাসির ওয়াদেন




নাসির ওয়াদেন

আরণ্যক হাসি 

মধ্যবিত্ত সমাজে একটা রঙিন সাপ
মৃত্যুপোকা অনবরত খোলস ছাড়ছে

রাত্রি খোঁজে এক একটা নির্দোষ পাপ•••

পরাশ্বর চাঁদ আঁকে ছন্দে লৌকিক ছবি
অস্থায়ী মৃত্যু কাঁধে কাঁধে বয়ে
ক্লান্ত পরাশ্রয়ী ডালের উদাসী বাতাস

উপল জীবন বাজী রেখে আমরণ ছায়া
ইলার শরীরে
ভাসে
আরণ্যক হাসি

এ হাসিতে সূর্যও ঝরে পড়ে
ঝরে ধৈর্য্যের ডাল হতে অসংযম ক্ষুধা






সখ্যতার সান্নিধ্যের উত্তাপ 

অহংকারের বাতি জ্বলছে বলেই শুভ্রা
অনেক পথ হেঁটেছিল
হেঁটেছিল তার  ভালবাসা

বিন্দু সুরে বাজে অমলকান্তি রোদ-ধ্বনি

শস্যক্ষেতের ক্ষীণ জরায়ু  থেকে ঝরে পড়ে
অহংকারের ফোঁটা ফোঁটা স্রাব••••

একবার বিনিময় করা হলে প্রশ্বাস 
নিঃশ্বাস বদলে ফেলত ভালবাসা
তুমি হিরণ্য হয়ে যেতে

মৃত জার্মানদের  আস্ফালন দেখে
হেসে ওঠে জোৎস্নার লাল ঘোড়াগুলো

গা-ঝাড়া ধুলোবালি চেটে ঝড়
মুহূর্তগুলো মিশিয়ে লংমার্চে ফোয়ারা তোলে

সখ্যতার সান্নিধ্যে শীৎকার শোনে রজনী
যে মানুষ পোড়ে, পুড়ে ছাই তার কাদা মাটি

ঘর গোছাতে এলে না
ঘরের সর্বাঙ্গে বিছানো জড়ুল পোড়ে 
পুড়ে সান্নিধ্যের উত্তাপে







প্রমিথিউসের আগুন 

আত্মাকে উত্তাপ দিতে মনের আগুন জ্বালো
আঁচ পাবে , উষ্ণতা পাবে ,

একটু আগুন চেয়েছিলাম
পূর্বপুরুষ  প্রমিথিউসের কাছে
পুড়িয়ে ফেলতে বিভৎস আর্তনাদগুলো

প্রতিদিন বিড়াল পায়ে পায়ে ঘোরে•••

বৃহন্নলা পাথরের কাছে আজও কাঙাল
আমাদের মৃত আলোগুলো
ভরসা সেই  সংগ্রামী পাথর

কী চমৎকার অন্ধকার । যৌবন যুগ
পেরিয়ে শেওলার বংশধর
ঘিরে রাখে তাকে 
আজও প্রমিথিউসের আগুন আমাদের ঘরে

আগুনের ছোঁয়া কবোষ্ণ হাতদুটো
কান্নাজলে পিপাসার চাঁদ হয়ে সাঁতার কাটে






নতুন সভ্যতা ও এক অসমাপ্ত দাঙ্গা 

অনাঘ্রাত স্তনগুলো বেঁচে আছি সোল্লাসে শীতে
নরম রাতের কাছে নগ্ন হওয়া অশরীরী শরীর

বাতাসের ঢেউগুচ্ছ শব্দহীন বিমল প্রভাতে
আঙুলে আঙুলে ছোঁয়া প্রেম, একান্ত নিবিড়

মানুষের কণ্ঠে শুনি দেবারি সুর রৌরবের ধ্বনি
দেয়াসিনি অমঙ্গল ডাক, সভ্যতা লুকাইছে মুখ

ছায়া হাঁটে অনন্ত ছায়ার ভেতরে, হাঁটে আর্জুনি
ঝুঁকে থাকা মাটি, শরীরে শরীরে জীবন্ত অসুখ

অসমাপ্ত দাঙ্গা এক চোরাস্রোত বহে সূক্ষ্ম গভীরে
সভ্য চাঁদ স্বপ্ন মুখে ঝুলকালি মাখে

স্মৃতিফলকে ঢাকা দাঙ্গাচিহ্ন কালো অক্ষরে
অদ্ভূতভাবে বেঁচে থাকে রোদ পোড়া পাঁকে






শিশির বাতাস শীত আনে 

হেমন্ত চলে যাচ্ছে, ধীরে ধীরে আঁকা রোদছায়া
লিপ্সার আকাশ জেগে ওঠে অভিমানী চাঁদ--
অদৃশ্য পাথর বুকে উপত্যকার সহিষ্ণু প্রচ্ছায়া
হারানো আঁধার আনে আবেগী হিমেলের স্বাদ

রাতে শেয়াল ডাকে, ক্বচিৎ পেঁচাদের হাঁক
বিশৃঙ্খলার জালে আটকে যায় সময়ের দাবি
মিথ্যে ভরসার সাইরেন ধ্বনি, পৌষের ডাক
জলতরঙ্গে আঁকা শিউলি রোদের সোনাছবি

সহৃদয় মেঘের কচি হাওয়া আঁকাবাঁকা পথে
বৃষ্টিকথা বলে গেল,নিঃশব্দ কথাহীন  ঠোঁটে 
হরিণীকান্তা উত্তেজন আর উন্মাদনার সাথে

শিশির বাতাস শীত আনে হেমন্তের ভাঙামাঠে