তৈমুর খান
ক্রীতদাস 
খুব জোরে
নিঃশ্বাস ফেলবেন না 
হাঁটতে গিয়ে
পায়ে শব্দ তুলবেন না
চারপাশে অনেক
সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে 
কোনও দিকে
তাকাবেন না 
প্রতিটি নারীঅঙ্গ
ডাকবে 
শুনতে পাবেন
কিন্তু কাছে
যাবেন না 
পতাকা ধরে
থাকবেন 
যা সবাই বলবে
তাই বলবেন 
কাঁদতে ইচ্ছে
হলে নিঃশব্দে কাঁদবেন 
হাসতে ইচ্ছে
হলে নিঃশব্দে 
আপনি এখন
আলাদা কোনও ব্যক্তি নন
আলাদা কোনও
শক্তি নন 
আপনি এখন
মৃত 
কোনও অধিকার
চাইবেন না । 
বর্ণিত জীবন
জীবন বর্ণনাহীন,
তবু কেন বর্ণিত হয়  ? 
নদী যায়
কোনও উপমায় 
ফুল ফোটে
মাধুর্য সংকেতে 
পাখিরাও পাখিহীন
নিজস্ব নিভৃতে 
সংকট মোচন
হয় ? বরং সংকটে 
বৃষ্টিমুখ ফুটে
ওঠে 
উৎস মেঘ
পাঠায় স্রোত 
স্রোতে স্রোতে
প্লাবিত ভবিষ্যৎ 
নিরিবিলি থেকে
জেগে ওঠে মগ্ন মাঠ
জীবন-শস্যে
করে আয়ু পাঠ 
দৈনন্দিনের দৈন্যে
নীল প্রভাত 
বর্ণিত জীবন
খায় উপমার ভাত   । 
নতুন ভোর
কাদের স্কুল
বসে রোজ  ? 
স্কুলে সরস্বতী
এসে 
বিদ্যার ব্যঞ্জন
রেঁধে দেয় 
পাতা আর
পাতা জুড়ে 
লিখে যায়
নতুন সমাজ 
কোথায় লুকিয়ে
রাখি তোকে ? 
সন্তানের পিতা
অথবা পিতার সন্তান 
একদিন সব
অন্ধকার ভোর হবে 
ভোর এসে
মুছবে ব্যবধান 
ওপার থেকে
ফিরে আসে সূর্য 
এপার থেকে
জেগে ওঠে গান 
সরস্বতী খুলে
দেয় নবান্নবাগান   । 
দশটা দশ
এখন আর
কোনও যন্ত্রণাই বেজে ওঠে
না 
দশটা দশের
লোকালে মৌসুমি বাতাস নামে
তারপর পাহাড়ের
দিকে চলে যায় 
বেজন্মা কৃষকের
ঘরে দুর্ভিক্ষের কাক
ডাকে 
অথবা রেললাইনের
যান্ত্রিক শব্দ 
রাস্তা ভুল
হয় না 
পাহাড়ে ইউক্যালিপটাস
লম্বা হাত বের করে
দেয় 
তার বুকের
শার্টে সব বোতাম খোলা
মৌসুমি ওখানেই
তার সব ফসল তুলে
দেয় 
এভাবেই তো
অনন্ত মৌসুমি 
অনন্ত ইউক্যালিপটাসের দিকে চলে যাচ্ছে 
পাহাড়ে পাহাড়ে
দশটা দশ
বেজে যাচ্ছে রোজ অনন্ত
কালের ঘড়িতে 
জীবিকা 
মধ্যরাত বিক্রি
হয় নগদ পয়সায় 
শেষরাতে নিষ্কলঙ্ক
সূর্য ডাকে 
জীবিকা এমনি
করে বাঁচে 
কাদের পৃথিবী
কারা কিনে নেয় ? 
পৃথিবীতে নদীরা
ফেরে ক্রীতদাসী হয়ে 
এক একটি ঢেউয়ের
নীচে জীবন ঘুমায় 
জীবনের গর্জন
পড়ে থাকে 
সব বিক্রি হয়ে
যায় 
মধ্যরাতে বিবেক
ও দংশন চরে 
কোনও কোনও
চাঁদের আলোতে 
মরচে পড়া
দিনগুলি তবুও আহ্লাদ পায়
স্বপ্ন গুলে
খেতে দেয় চোখের জলের
সরবতে । 

