বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭

বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়




বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়  

দানা মাঝি

স্ত্রীর লাশ কাঁধে নিয়ে শিব হাঁটে 
হিমালয় থেকে দূর সীতাকুণ্ড নয়  আরও দীর্ঘপথ ...
আবহমান এই পরিক্রমা , এর কোন পূর্ণচ্ছেদ  নেই

ডিজিটাল ভারতবর্ষ
একদিকে উন্নয়ন দক্ষযজ্ঞ  প্রগতির খেলা
বিপরীতে অর্ধনগ্ন উলঙ্গ ঈশ্বর  ছাইমাখা  হাতে আজও
ধরে আছে ভালোবাসা  , অন্য হাত আগামীর দিকে ।

দশ কিলোমিটার  নয়
দানা মাঝি , প্রাক ইতিহাস থেকে হেঁটে  আসছো তুমি
পুরাণের পাতা থেকে উঠে আসে কালাহান্ডি  মেলাঘর গ্রাম
অন্নের অভাব ঘরে , পয়সা নেই  সচ্ছলতা নেই
শুধু কান্না , হাহাকার , বুকভর্তি ভালোবাসা  নিয়ে
কাঁধে সতী  মৃতদেহ
অন্য হাতে ধরে আছো স্বপ্ন ও সন্তান । 





বেসামাল

মেঘ লুকিয়ে এ কেমন বর্ষাকাল !
সিন্দুকের চাবি খুলে
নিয়ে এসো মৌসুমি , সামনে যা পাবে
তাই
ভিজতে চাই সর্বনাশ
তোমার উৎসাহ জলে
ব্যাকরণ ও শাসন পেরিয়ে
বেহিসাবী , অগোছালো , বেসামাল ... 





শুভেচ্ছা

জলের কাঠামো ভেঙে
কতদূর চলে যায় বিস্তীর্ণ শ্রাবণ
জানলার পাশে এসে
দাঁড়িয়েছে যে মেঘ
তাকে ডাকি চুপিচুপি , শোনো, তুমি মেয়ে
হেসে ওঠে
তার ভিজে ঠোঁট 
চলে গেছে পায়ের শ্রাবণরেখা ফেলে
তাকে আর দেখি না কোনদিন এ পাড়ায়
শুধু সেই শুভেচ্ছার খাম
পড়ে আছে নির্জন জলের অক্ষরে ।





মাধ্যাকর্ষণ অথবা আপেলের জন্ম বৃত্তান্ত

বল ছুঁড়ে দিচ্ছি উপরে
আর কাপড়ে মুখ ঢেকে  মাংসের গল্প করছে
একদল লোক


একটা হাসি ঝরে
                  প  ড় ছে    কোথাও
চিৎকারের ভেতর অঝোর বৃষ্টি
ভিজে যাচ্ছে লম্বাদুপুর।
এই গ্রহণযোগ্যতার  আলো  ফুটে উঠছে  দূরে
কোন দূরবীনের গায়ে ।
যাবতীয় অসন্তোষে   ক্লান্ত ঘৃণাপথ
ছদ্মসফরে  বিন্দু বিন্দু অধিকার   



অকথ্য লোভের  মাধ্যাকর্ষণ
        নীচে নেমে আসছে       গন্তব্য 





 কাগজ

অবাধ্য শরীর নিয়ে ধর্মভ্রষ্ট রথে
আড়ম্বরহীন এক মাংসের দোকানে
                 কোন সন্ধ্যেবেলা
সে দেখেছে ক্রমশ অভুক্ত পথে
 দাঁতের ঠিকানা আর চোয়ালের হাড়ভাঙা খেলা
তিন পয়সার ভেল্কি   কত কেরদানি
    প্লেট ভর্তি বিষণ্ণ খাবার
ল্যাম্পপোষ্ট অপেক্ষা করে সারারাত
ছায়া , আপাতত  ছায়াই আবার ।
 ফিকে হয় মোমরাত , ফুলস্কেপ অন্ধকার
                              আঁকে
দূরের টেবিল নিভু ,
       
               নিঃস্পন্দ কাগজ পড়ে থাকে