অভিজিৎ পাল
আত্মচৈতন্য ১
এসেছে সে কাছে।
গুপ্ত ঘাতকের মতো
হাসিমুখে এসে বুকে
জড়িয়ে ধরে
কাঁধের কাছে বসিয়ে
দিচ্ছে দাঁত
দুই হাতের নখে
আঁচড়ে দিচ্ছে শরীর।
আমি তাকে বিশ্বাস
করে বিলিয়ে দিতে
চাই এখনও আমার
মৈত্রী,
আমার
বহু পূর্বপুরুষের
অর্জিত সফলতা,
বহু
পূর্বনারীর অর্জিত
স্নেহ,
যা
আমার রক্তে
আজন্ম দোষের মতো
বইছে। বিলিয়ে
দিতে চাই, বিকিয়ে যেতে চাই।
দুই হাত
এক করে ভালোবেসে
যেতে চাই,
বলতে
চাই আর কাদা
মাখামাখি নয়,
এবার
দেবতা গড়ে তোলার
সময় এসেছে।
আত্মচৈতন্য ২
চেতনার গহন থেকে ছোট
ছোট বুদবুদ
ওঠে। বাতাসে মিলিয়ে
যায়। সূর্যের দাগ
ছুঁয়ে বেনীআসহকলা
রঙ ফোটে। মিলে
মিশে যায়, হারিয়ে যায় রুটিন
মেনে রোজ
গরাদ ধরে বসে থাকার
দিনে, ছুটি ছাড়া
যখন আর কিছুই বাকি
থাকে না,
নিজের
সামনে দাঁড়িয়ে
দেখি সাদা রঙহীন কাচ।
নিজেকে দেখা যায়।
নিজেকে বোঝা যায়।
আমার মতো দাঁড়িয়ে
থাকা লোকটার আর
কতটুকুই-বা আমি। নাদ
ওঠে। নাদ নেমে
যায়। আত্মচৈতন্য
দানা বাঁধে আলোময়।
সোঽহং। সোঽহং।
সোঽহং। আমি হারায়।
আত্মচৈতন্য ৩
নিজেই নিজের দীপ হব
একদিন। বিচার
বিভাগ দেহের ঘরেই
আদালত চালাবে।
হাসব কিন্তু হাসব
না। কাঁদব তবু কাঁদব না।
উন্মাদ হব না।
অন্ধকার অধ্যায়গুলো সব
উজ্জ্বল আলোর
ঝঞ্ঝায় উড়ে গেছে বহু
দূরে। লণ্ঠন বাতি
হাতে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি,
চাইলেও মুখ দেখতে
পারছি না তাঁর। বীজ
ধ্বনিত হচ্ছে। বীজ
থেকে চারা। চারা থেকে
একদিন বটগাছ হয়ে
যাবে। গুরু মহারাজ
লণ্ঠন তুলে ধরছেন
মুখের কাছে। মুখোমুখি
দাঁড়িয়ে চিনতে
শিখছি আত্মদীপের পর্যায়।