সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০

অনুপ মণ্ডল

 




অনুপ মণ্ডল


এক কাপ চায়ের বিকেল


চাইছো না জানি অথচ তাকে পাওয়ার জন‍্য

একটু পরে আমাকে ভীষনভাবে দরকার হবে তোমার

আমারও তাই;তোমাকে আমার ভীষন ভীষন

অথচ তোমাকে আমি ঠিকঠিক চাইছিনা এসময়


শাপলার নাল ভেঙে ভেঙে তুমি এগিয়ে চলেছো

নুয়ে নুয়ে পড়ছে খাস জমির বেদখল কোলাহল

জঙ্গলের ভেতর থেকে ভেসে আসছে

নীল তিমির রহস‍্যঘন বিকেল আর

কানের লতিতে আলতো করে একটু কামড়

দূরাগত আলোর উচ্চারণে একটা নাম।অস্ফুট

 

নামে কী আসে যায়!

ভাসমান পাথরের ওপর আমিও তো তখন দাঁড়িয়ে

ওড়নায় ঋণ;কবেকার নির্বাপিত সে মুখ,হঠাৎ জাগ্রত

 


 

ঘোগ


অধিকারবোধ!বাঘ তোমাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার পর

আমি রোজ সেখানে গিয়ে দাঁড়াই

ঘটনাটা রোজ রোজ অভিনীত হয় আর

ঘটনাস্থল সেই একই।পাথর ছড়ানো

পাথরের গায়ে

তোমার ঐ উলঙ্গ শরীর টেনে নিয়ে যাওয়ার রক্তদাগ


খেয়েদেয়ে কোন পাথরের কোলে ঘুমিয়ে পড়লে বাঘ

নদীর ধার থেকে আমি গোপনে কুড়িয়ে আনি

তোমার স্তন তোমার যোনি তোমার থাই

সঙ্গে সামান‍্য কিছু রক্ত-মাংস ও সাদা-কালো হাড়


আমি কাঁদি

গাছপালার আড়ালে গাছেদের সামনে বসে

এখন আমার খুব জোরে জোরে কাঁদতে ভালো লাগে

সঙ্গে কাঁদে স্তন;তোমার রক্ত-মাংস ও তোমার যোনি

 

 

মুখোমুখি


দূরাগত জাহাজের ধ্বনি।কুয়াশায় মীমাংসিত আলো

ঢেউ আমাদের

চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে গিয়েছিল

নাকানি-চোবানি

অতঃপর যে যতবার পেরেছি

জলের ওপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে

চাবুকের পর চাবুক।হিসহিস হিসহিস

জলকে ক্রমাগত শাসন করে গেছি তরলতায়


যোনিবেলার শেষ বিকেল; ঘাট একটা ছিল যদিও

আমাদের জন‍্য কোনও নৌকো বাঁধা ছিল না

অস্তমিত আলোয় রাঙা হয়ে ছিল পলি

চুরিকরা অন্ধকারে হলুদ আলোর চৈতন‍্য

মাথা নীচু হয়ে এসেছিল ঢেউয়ের


এখন আমরা বহির্কক্ষপথে দুজন মুখোমুখি

মগ্ন মাস্তুলের ভেঙেপড়া ভবিষ‍্যৎ নিয়ে কথা বলছি